ভৈরবে যুবককে কোপানোর পর উল্টো মামলা
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মোবারক মিয়া (৩০) নামের এক যুবককে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে একদল দুর্বৃত্ত। ঘটনার পর ওই অভিযুক্তরাই প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে উল্টো থানায় মামলা করেছে। ওই মামলায় বাদীর প্রতিপক্ষ কালা মিয়াকে গ্রেপ্তার করে সোমবার আদালতে চালান করে পুলিশ।
ঘটনাটি ঘটেছে ভৈরব উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়নের শ্রীনগর গ্রামে গত শনিবার। আহত মোবারক বর্তমানে শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। হামলায় তাঁর একটি পা ভেঙে গেছে। এ ছাড়াও ভাঙা পাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ৩৩ সেলাই দিতে হয়েছে বলে জানান চিকিৎসক।
আহত মোবারক জানান, মামলার বাদী উপজেলার শ্রীনগর গ্রামের গোইল্লার বাড়ির মাসুমের বাবা আলাউদ্দিন ও চাচা কালা মিয়ার পারিবারিক জায়গা সংক্রান্ত ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে ঝামেলা চলছিল। এ নিয়ে গত শনিবার দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে।
সংঘর্ষ চলাকালে মোবারক দুইপক্ষের লোকজনকে ফেরাতে গেলে আলাউদ্দিন মিয়ার ছেলে ও মিথ্যা মামলার বাদী মাসুমের ভাই মাহফুজ মিয়া ক্ষুব্ধ হয়ে হাতে থাকা ধারালো দা দিয়ে মোবারক মিয়াকে কুপিয়ে আহত করেন। পরে স্বজনরা মুমূর্ষ অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
ঘটনার পর আলাউদ্দিন মিয়ার ছেলে মাসুম মিয়া তাঁর ভাই মাহফুজ মিয়াকে বাঁচাতে এবং প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে আহত মোবারককে নিজের ভাই দাবি করে ভৈরব থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করে। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ কালা মিয়াকে আটক করে। দুইদিন থানায় আটক রাখার পর দাখিলকৃত অভিযোগটিকে মামলা হিসেবে গ্রহণ করে তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে সোমবার আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভৈরব থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আমজাদ হোসেন জানান, মামলার বাদী মাসুম মিয়া ঘটনার দিন উপজেলার শিমূলকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান যোবায়ের আলম দানিছকে সঙ্গে নিয়ে থানায় এসে ওসি স্যারের কাছে অভিযোগ দেন। সেখানে মোবারককে তাঁর ভাই দাবি করে এবং ঢাকায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে উল্লেখ করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ওই দিন রাতেই কালা মিয়াকে আটক করা হয়।
বিষয়টি সালিশ দরবারের মাধ্যমে মীমাংসা করবে বলে জানালে আটককৃত কালা মিয়াকে কোর্টে চালান দেওয়া হয়নি। পরে স্থানীয় মাতব্বররা বিষয়টি সমাধান করতে ব্যর্থ হয়েছে বলে জানানোর পর সোমবার কালা মিয়াকে কিশোরগঞ্জ জেলহাজতে চালান করা হয়।
এসআই আমজাদ আরো জানান, মোবারক ও কালা মিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় এজাহার দিলে সেটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করে প্রকৃত অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।