ওসি মোয়াজ্জেমের আগাম জামিন আবেদন
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনে দায়ের হওয়া মামলায় আগাম জামিন চেয়ে বুধবার হাইকোর্টে আবেদন করেছেন সোনাগাজী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেন।
হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ওসি মোয়াজ্জেমের পক্ষে আবেদনটি করেন আইনজীবী সালমা সুলতানা। আবেদনটির একটি কপি অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে জমা দেওয়া হয়েছে।
আসামি মোয়াজ্জেম হোসেনের আত্মসমর্পণের মাধ্যমে আবেদনটি বিচারপতি মো. হাবিবুল গনি ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানি করা হবে বলে ওই আবেদনে উল্লেখ রয়েছে।
এর আগে গত সোমবার এ মামলায় ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আস সামছ জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন।
ওই দিন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রীমা সুলতানা ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে আইসিটি মামলায় ১২৩ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন আদালতে জমা দেন। পরে ওসির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। শুনানি শেষে বিচারক গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আদেশ দেন।
ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির আনা যৌন হয়রানির অভিযোগের ভিডিও ধারণ এবং তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে গত ১৫ এপ্রিল বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বাদী হয়ে ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে মামলাটি করেন। এরপর বিচারক মামলাটি পিবিআইকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিমের পরীক্ষার্থী ছিলেন নুসরাত জাহান রাফি। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ এনেছিলেন তিনি।
নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী থানায় মামলা করেন। এরপর অধ্যক্ষকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে নুসরাতের পরিবারকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। গত ৬ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে আলিম পর্যায়ের আরবি প্রথম পত্রের পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে যান নুসরাত। এ সময় তাঁকে কৌশলে ছাদে ডেকে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। সেখানে তাঁর গায়ে কেরোসিন ঢেলে দিয়ে আগুন দেওয়া হয়। গুরুতর দগ্ধ নুসরাত পাঁচ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে হার মানেন। ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান তিনি।