কেরানীগঞ্জে আদালত স্থানান্তর : খালেদা জিয়ার রিট মুলতবি
কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগার প্রাঙ্গণে আদালত স্থানান্তরে জারি করা প্রজ্ঞাপন চ্যালেঞ্জ করে বিএনপি চেয়ারপাসন খালেদা জিয়ার রিটের প্রথম দিনের শুনানি শেষ হয়েছে। পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১০ জুন দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।
আজ মঙ্গলবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন মো. খুরশিদ আলম খান।
গত ১২ মে পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করে আইন মন্ত্রণালয় বিএনপি চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া ১৭ মামলার বিচারিক কার্যক্রম কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতে চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ফৌজদারি কার্যবিধির ৯ নম্বর ধারার ২ নম্বর উপধারায় কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে নবনির্মিত ২ নম্বর ভবনকে অস্থায়ী আদালত হিসেবে ঘোষণা করা হলো।
এ প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের দাবিতে ২১ মে খালেদা জিয়ার পক্ষে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়। ওই নোটিশে দাবি করা হয়, গত ১২ মে আইন মন্ত্রণালয় একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। ওই প্রজ্ঞাপন অনুসারে খালেদা জিয়ার মামলার শুনানির জন্য পুরান ঢাকার সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আদালত (বিশেষ জজ আদালত-৯) স্থানান্তর করে কেরানীগঞ্জে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই প্রজ্ঞাপন বেআইনি। কারণ, সংবিধানের ৩৫ অনুচ্ছেদে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, যেকোনো বিচার হতে হবে উন্মুক্তভাবে। কারাগারের একটি কক্ষে বিচার হতে পারে না। ফলে এই প্রজ্ঞাপন সংবিধানবিরোধী।
কোথায় কোথায় কারাগার স্থানান্তরিত হতে পারে তা ফৌজদারি কার্যবিধি আইনে দেওয়া আছে। ফৌজদারি কার্যবিধি আইনে কোথাও উল্লেখ নেই যে, কারাগারের মধ্যে আদালত স্থাপন হতে পারে। সুতরাং সংবিধান ও ফৌজদারি আইনের বিরুদ্ধে সরকার অবস্থান নিয়েছে।
কিন্তু নোটিশের কোনো জবাব না পেয়ে গত রোববার রিট আবেদন করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।
দুদকের করা মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তবে চিকিৎসার জন্য গত ১ এপ্রিল তাঁকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) নেওয়া হয়। এরপর থেকে সেখানেই আছেন তিনি।
প্রজ্ঞাপন প্রকাশের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছিলেন, বিএসএমএমইউতে চিকিৎসা শেষে খালেদা জিয়াকে কেরানীগঞ্জ কারাগারে নেওয়া হবে। পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারকে জাদুঘর বানানো হবে বলেও জানান তিনি।