ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন, আদালতের ক্ষমা পাননি সিভিল সার্জন
১৩ বছর বয়সী সীমা পটুয়াখালীর একটি মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। গত বছর ২৪ অক্টোবর সীমাকে গণধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ডা. রেজাউর রহমান প্রতিবেদনে লিখেন, ‘গলায় দাগ রয়েছে, শ্বাসরোধে মেয়েটির মৃত্যু হয়েছে। তবে এটা দুর্ঘটনাজনিত কারণে হতে পারে।’ ওই প্রতিবেদনের সঙ্গে একমত পোষণ করেন পটুয়াখালীর সিভিল সার্জন ডা. শাহ মো. মোজাহিদুল ইসলাম।
হাইকোর্টের তলবে আজ বুধবার আদালতে হাজির হন সিভিল সার্জন ডা. শাহ মো. মোজাহিদুল ইসলাম। আদালতে হাজির হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চান তিনি। তবে আদালত তাঁকে ক্ষমা করেননি।
ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে বিপরীতধর্মী তথ্য দেওয়ায় সিভিল সার্জন ডা. শাহ মো. মোজাহিদুল ইসলাম ও মেডিক্যাল অফিসার রেজাউর রহমানের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেন আদালত।
আজ বুধবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বেঞ্চ ওই আদেশ দেন।
শুনানির সময় রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইউসুফ মাহমুদ মোর্শেদ।
আদালত সিভিল সার্জনকে বলেন, ‘এভাবে যদি ময়নাতদন্ত রিপোর্ট দেন তাহলে জাতির কাছে কী বার্তা যায়? এভাবে রিপোর্ট দেওয়ার কারণে একটা মামলার বিচার প্রভাবিত হয়, এমনকি রায় ভিন্ন হয়। যেখানে বাদী ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়।’ পরে আদালত ক্ষমার আবেদন নাকচ করে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।
জানা যায়, সীমা পটুয়াখালী রাঙ্গাবালী হামিদিয়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। গত বছরের ২৪ অক্টোবর সীমাকে গণধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। ঘটনার তিন মাস পর গত ৩ জানুয়ারি পটুয়াখালীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি নালিশি অভিযোগ করা হয়।
সীমার মা তাসলিমা বেগম বাদী হয়ে আটজনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন। প্রথমে থানায় মামলা করতে গেলে থানা পুলিশ মামলা গ্রহণ করেনি। এ মামলার আসামি দানেশ চৌকিদার হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন। ওই জামিন আবেদনে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে আসামি পক্ষ। সেখানে ময়না তদন্তকারী চিকিৎসক ডা. রেজাউর রহমান প্রতিবেদনে ওইসব তথ্য লেখেন। ওই প্রতিবেদনের সঙ্গে একমত পোষণ করেন সিভিল সার্জন।
আদালত বলেন, ‘যেখানে মেয়েটির মা ধর্ষণের পর হত্যা করার অভিযোগে মামলা করেছেন, সেখানে চিকিৎসক ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে কীভাবে অসঙ্গতিপূর্ণ মন্তব্য করেন?’