আদালত স্থানান্তরের প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার চেয়ে আইনি নোটিশ
বিএনপি চেয়ারপাসন খালেদা জিয়ার বিচারে কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগার প্রাঙ্গণে আদালত স্থানান্তর করা নিয়ে গত ১২ মে-এর প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার চেয়ে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার রেজিস্ট্রি ডাকযোগে খালেদা জিয়ার অন্যতম আইনজীবী কায়সার কামাল আইন সচিবকে এ নোটিশ পাঠান।
এ বিষয়ে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল এনটিভি অনলাইনকে বলেন, গত ১২ মে আইন মন্ত্রণালয় একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। ওই প্রজ্ঞাপন অনুসারে খালেদা জিয়ার মামলা শুনানির জন্য পুরোনো ঢাকার সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আদালত (বিশেষ জজ আদালত-৯) স্থানান্তর করে কেরানীগঞ্জে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই প্রজ্ঞাপন খালেদা জিয়া ও আমরা বেআইনি বলে মনে করি। কারণ সংবিধানের ৩৫ অনুচ্ছেদের স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, যেকোনো বিচার হতে হবে উন্মুক্তভাবে। কারাগারের একটি কক্ষে উন্মুক্তভাবে বিচার হতে পারে না। ফলে এই প্রজ্ঞাপন সংবিধানবিরোধী।
একইসঙ্গে কোথায় কোথায় কারাগার স্থানান্তরিত হতে পারে তা ফৌজদারি কার্যবিধি আইনে দেওয়া আছে। ফৌজদারি কার্যবিধি আইনে কোথাও উল্লেখ নেই যে, কারাগারের মধ্যে আদালত স্থাপন হতে পারে। সুতরাং সংবিধান ও ফৌজদারি আইনের বিরুদ্ধে সরকার অবস্থান নিয়েছে।
কায়সার কামাল বলেন, আমরা ওই প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার করতে আইন মন্ত্রণালয়কে ২৪ ঘণ্টা সময় দিয়েছি। অন্যথায় নোটিশের জবাব না পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করব।
এর আগে গত ১৩ মে কারাবন্দি বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা ১৭টি মামলার বিচার কার্যক্রম ঢাকার কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে পরিচালিত হওয়ার প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়।
আইন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব গোলাম সারোয়ার স্বাক্ষরিত একটি মামলা স্থানান্তরের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, নিরাপত্তাজনিত কারণে ঢাকা মহানগরের ১২৫ নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরাতন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রশাসনিক ভবনের কক্ষ নম্বর ৭ এর অস্থায়ী আদালত থেকে নিরাপত্তাজনিত কারণে ফৌজদারি কার্যবিধির ৯ (২) নম্বর ধারা অনুযায়ী নিষ্পত্তির জন্য ঢাকার কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারের সম্মুখে নবনির্মিত ২ নম্বর ভবনকে অস্থায়ী আদালত হিসেবে ঘোষণা করে স্থানান্তর করা হলো।
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা মামলাগুলোর মধ্যে মোট ১৭টি মামলা স্থানান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তথ্য কর্মকর্তা ড. রেজাউল করিম। তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে করা মামলাগুলোর মধ্যে ১৭টি মামলা নিষ্পত্তির জন্য কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে ২ নম্বর ভবনকে অস্থায়ী আদালত ঘোষণা করে তাতে স্থানান্তর করা হয়েছে।
মামলাগুলো স্থানান্তরের বিষয়ে আইন সচিব আবু সালেহ শেখ মুহাম্মদ জহিরুল হক এনটিভি অনলাইনকে বলেন, নিরাপত্তাজনিত কারণে মামলাগুলো স্থানান্তর করা হয়েছে।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিট্যাবল ট্রাস্ট মামলায় দণ্ডাদেশ পাওয়া বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) রয়েছেন। এত দিন নিরাপত্তার কথা বলে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে ছিলেন তিনি।