আইন লঙ্ঘন করে ভারত একতরফাভাবে পানি প্রত্যাহার করছে : কৃষিমন্ত্রী
কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাক বলেছেন, আন্তর্জাতিক আইন ও রীতিনীতি লঙ্ঘন করে ভারত আমাদের উজানের প্রায় সব নদীর পানি একতরফাভাবে প্রত্যাহার করে নিচ্ছে। এর বিরূপ শিকার হচ্ছে বাংলাদেশ। দ্বিপাক্ষিক এ ইস্যুটি নিয়ে আমাদের আন্তর্জাতিক মন্ডলে ভাবতে হবে।
আজ শনিবার রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরাম আয়োজিত ‘জলবায়ু পরিবর্তন: কৃষি খাতের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এ সেমিনারে আরো বক্তব্য দেন অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলিকুজ্জামান আহমেদ, সাবেক সচিব ড. আনোয়ার ফারুক, ড. মো. নুরুল ইসলাম, কাওসার রহমান, মোতাহার হোসেন, প্রসুন আশীষ, রফিকুল বাসার প্রমুখ।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘দিনদিন আমাদের পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। ফলে সমুদ্রের লবণাক্ত পানি ধীরে ধীরে সমভূমির দিকে আসছে। এতে কৃষিখাতের বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমরা আশঙ্কা করছি। ভারত উজানের প্রায় সব নদী থেকে একতরফাভাবে পানি প্রত্যাহার করে নিয়ে তাদের জমিতে সেচ কাজে ব্যবহার করছে। এতে আমাদের নদ-নদীগুলোর পানির স্বাভাবিক প্রবাহ কমে গেছে। ভারত এটা করছে আমাদের না জানিয়ে এবং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে। এ বিষয়টি নিয়ে আমাদের এখনই ভাবতে হবে।
ধানের দাম কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, ধানের এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। আমাদের উৎপাদন টার্গেট ছিলো ১ কোটি ৪০ লাখ টন। উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি ৫৩ লাখ টন। ১৩ টন ধান বেশি উৎপাদন হয়েছে। এটি অবশ্যই আমাদের দেশের জন্য ভালো লক্ষণ। আগে আমরা সবসময় খাদ্য ঘাটতির দেশ ছিলাম। এখন আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, কৃষি গবেষণা ও উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে কৃষি উৎপাদন বেড়েছে। উৎপাদন খরচ কমিয়ে আনার বিষয়ে আমরা কাজ করছি। কৃষকদের মুখে যাতে সব সময় হাসি থাকে আমরা সেই ব্যবস্থা করছি। কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্যের উপযুক্ত মুল্য পাবেন।
সরকারিভাবে ধান কেনার বিষয়ে আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘ধান কিনে ধানের দাম বাড়ানোর সুযোগ আপাতত সরকারের হাতে নেই। আমি ও খাদ্যমন্ত্রী গতকাল এ বিষয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। প্রধানমন্ত্রীও বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত। ধানের দাম বাড়ানোর একমাত্র উপায় হলো চাল রপ্তানি করা। এটাও আমাদের চিন্তাভাবনা করে করতে হচ্ছে।’
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘গতবারের মজুদ এখনো অবশিষ্ট আছে ৮/১০ লাখ টন। মিলাররাও গতবার আমাদের অনুরোধে ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে ধান কিনে গুদামে রেখেছেন। তাঁরাও সেগুলো এখন বিক্রি করতে পারছেন না। কৃষি খাতে বিপ্লব হয়েছে। এটা ভালো দিক।’