শিশুটিকে পেতে হাজারো আবেদন, আসল মায়ের কাছে দিতে চায় পুলিশ
মঙ্গলবার ঢাকা শিশু হাসপাতালের বাথরুমে ফেলে যাওয়া শিশুটির দায়িত্ব নিতে দেশ-বিদেশ থেকে পুলিশের কাছে ফোনে ও সামাজিক মাধ্যমে হাজারো আবেদন আসছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। অনেকে হাসপাতালে লিখিত আবেদনও জানিয়েছেন। তবে পুলিশ চাইছে, তার আসল মায়ের পরিচয় খুঁজে পেতে।
এজন্য ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের ফেসবুক পাতায় শিশুটির প্রকৃত অভিভাবকের সন্ধান চেয়ে একটি পোস্ট দেওয়া হয়েছে।
পোস্টে বলা হয়েছে, তেজগাঁও বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকারের নির্দেশে শেরে বাংলানগর থানা পুলিশের তত্ত্বাবধানে নবজাতকটিকে শিশু হাসপাতালের একটি কেবিনে চিকিৎসকের সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখা হয়েছে। শিশুটিকে প্রকৃত অভিভাবকের কাছে ফিরিয়ে দিতে শিশু হাসপাতাল ও আশপাশের এলাকার সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজ পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি ম্যানুয়াল পদ্ধতিতেও চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
ওই ফেসবুক পোস্টে বলা হয়, ‘এই নিষ্পাপ শিশুটি ফিরে পাক তার মা-বাবাকে। মা-বাবার কোল আলোকিত করে বেড়ে উঠুক আসল পরিচয়ে।’
নবজাতকটির মা-বাবা কিংবা পরিচিত জনকে কেউ চিনে থাকলে বা তাদের সম্পর্কে কোনো তথ্য জানা থাকলে শেরে বাংলানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার মোবাইল নম্বরে (০১৭১৩৩৯৮৩৩৫) অথবা তেজগাঁও জোনের সহকারী কমিশনারের নম্বরে ০১৭১৩৩৭৩১৭৮ যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে পুলিশ।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টা নাগাদ কে বা কারা শিশুটিকে হাসপাতালে ফেলে গেল, এ ব্যাপারে পরিষ্কার কোনো ধারণা পাচ্ছে না শিশু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কিংবা পুলিশ। তবে প্রাথমিকভাবে কিছু সন্দেহ করা যাচ্ছে, সিসি টিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে।
ঢাকা শিশু হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. জহিরুল ইসলাম লিটন বলেন, ‘দেখে মনে হয়েছে শিশুটি একটু ভালো ফ্যামিলির। কারণ তার কালার, জন্মের পর যে ওয়েট (ওজন), বিল্ডআপ। এগুলো অনেক স্ট্যান্ডার্ড।’
ঢাকা শিশু হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. ফরিদ আহমেদ বলছিলেন, ‘বাচ্চাটি সুন্দর করে দুধ খাচ্ছে, প্রস্রাব-পায়খানা করছে। বমি করছে না বা কোনো ধরনের ইনফেকশনের প্রমাণ মেলেনি। বাচ্চাটা খুবই ভালো আছে।’
তবে যে বিষয়টি শিশু হাসপাতালের চিকিৎসকদের কাছে রহস্য মনে হচ্ছে তা হলো তার বয়স। অবৈধ সন্তান মনে করে সাধারণত জন্মের পর পরই শিশুদের ফেলা যাওয়ার রেকর্ড বেশি পাওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে মেয়ে শিশুটির বয়স কমপক্ষে পাঁচ থেকে সাত দিন।
শিশু হাসপাতালের অপর সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. আবু তায়েব বলেন, ‘এমনও হতে পারে, মা জানে না। অন্যজন এনে ফেলে দিয়েছে— এমনটাও তো হতে পারে। দুইটাই হতে পারে।’
ডা. মো. আবু তায়েব বলেন, ‘আমরা গতকাল যেটা দেখছি, দুইটা মহিলা একসঙ্গে আসছিল। একজন বোরকা পরা, তারা দুজন খুব তাড়াতাড়ি ভেতরে ঢুকল, পরে স্বাভাবিকভাবে আরামসে বের হয়ে আসল। হাতে যেটা দেখার মতো ছিল, সেটা পরে বের হওয়ার সময় আর ছিল না।’