নার্স তানিয়া ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে ময়মনসিংহে মানববন্ধন
কিশোরগঞ্জে চলন্ত বাসে ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নার্স শাহীনূর আক্তার তানিয়াকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় জড়িতদের বিচার ও ফাঁসির দাবিতে ময়মনসিংহে মানববন্ধন করেছে নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন ও স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার।
আজ শনিবার সকাল ১০টায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে ওই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
ঘণ্টাব্যাপী চলা মানববন্ধনে আগামী সাত দিনের মধ্যে তানিয়া ধর্ষণ ও হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করার আলটিমেটাম দেওয়া হয়। অন্যথায় দেশব্যাপী কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি ডাকার হুঁশিয়ারি দেন নেতারা। একই সঙ্গে এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট অবৈধ স্বর্ণলতা পরিবহনের রুট পারমিট বাতিল ও তানিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে পুনর্বাসনেরও দাবি জানানো হয়।
বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন ময়মনসিংহ শাখার সভাপতি লুৎফর রহমান, সাধারণ সম্পাদক নাজমা বেগম, স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন ময়মনসিংহ শাখার সাধারণ সম্পাদক সাব্বির হোসেন, নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থী রাশেদ, রনি, সারোয়ার হোসেন প্রমুখ এতে বক্তব্য দেন।
ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নার্স তানিয়া গত ৬ মে বিকেলে নিজ বাড়িতে আসার জন্য ঢাকার মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে স্বর্ণলতা পরিবহনের একটি বাসে করে রওনা হন। বাসটি কিশোরগঞ্জ-ভৈরব সড়কের বাজিতপুর উপজেলার পিরিজপুর ইউনিয়নের বিলপাড় গজারিয়া জামতলী নামক স্থানে পৌঁছার পর বাসের চালক ও সহকারীসহ অন্যরা শাহীনূরকে ধর্ষণ করে চলন্ত বাস থেকে ফেলে দেন। ভৈরব-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের ওই এলাকা থেকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধারের পর রাত পৌনে ১১টার দিকে তানিয়াকে কটিয়াদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
পরের দিন বিকেলে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে নার্স শাহীনূর আক্তার তানিয়ার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। ময়নাতদন্ত শেষে জেলার সিভিল সার্জন ডা. হাবীবুর রহমান জানান, নিহতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহ্ন পাওয়া গেছে, ধস্তাধস্তির কারণেই এই জখম হয়েছে। তা ছাড়া নিহতের যৌনাঙ্গ থেকে রক্তক্ষরণের আলামত ও আঠাল পদার্থের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। সব মিলিয়ে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যায়, ভিকটিমকে হত্যার আগে ধর্ষণ করা হয়েছে।
ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে তানিয়ার বাবা গিয়াস উদ্দিন বাদী হয়ে পাঁচজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে বাজিতপুর থানায় একটি মামলা করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাজিতপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সারোয়ার জাহান ৮ মে দুপুরে পাঁচ আসামিকে আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করেন। আসামিরা হচ্ছেন বাসচালক নূরুজ্জামান, চালকের সহকারী লালন মিয়া, রফিকুল ইসলাম রফিক, খোকন মিয়া ও বকুল মিয়া। শুনানি শেষে অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক আল মামুন আটদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।