বাসে নার্সকে গণধর্ষণের পর হত্যা, নেত্রকোনায় মানববন্ধন
ঢাকার ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নার্স শাহীনূর আক্তার তানিয়াকে গণধর্ষণের পর হত্যার প্রতিবাদে ও খুনিদের দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে নেত্রকোনায় মানববন্ধন করেছেন নার্সরা।
আজ শনিবার বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএনএ) নেত্রকোনা শাখার উদ্যোগে সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত আধুনিক সদর হাসপাতাল প্রাঙ্গণে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
নেত্রকোনা নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফাতেমা বেগম মানববন্ধনের সময় এ ন্যক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে বাসের অভিযুক্ত চালক ও সহকারীদের দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে বক্তব্য দেন।
এ ছাড়া মানববন্ধনে সাধারণ সম্পাদক পাপিয়া রহমান পপি, সাংগঠনিক সম্পাদক আয়শা খাতুন, কোষাধ্যক্ষ স্বপ্না আক্তার, দপ্তর সম্পাদক বিউটি রানী রায়, প্রচার সম্পাদক ফারিয়া আক্তারহ অনেকে বক্তব্য দেন।
বক্তারা হত্যাকারীদের দ্রুত বিচারের আওতায় এনে ফাঁসির দাবি জানান।
ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নার্স তানিয়া গত ৬ মে বিকেলে নিজ বাড়িতে আসার জন্য ঢাকার মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে স্বর্ণলতা পরিবহনের একটি বাসে করে রওনা হন। বাসটি কিশোরগঞ্জ-ভৈরব সড়কের বাজিতপুর উপজেলার পিরিজপুর ইউনিয়নের বিলপাড় গজারিয়া জামতলী নামক স্থানে পৌঁছার পর বাসের চালক ও সহকারীসহ অন্যরা শাহীনূরকে ধর্ষণ করে চলন্ত বাস থেকে ফেলে দেন। ভৈরব-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের ওই এলাকা থেকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধারের পর রাত পৌনে ১১টার দিকে তানিয়াকে কটিয়াদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
পরের দিন বিকেলে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে নার্স শাহীনূর আক্তার তানিয়ার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। ময়নাতদন্ত শেষে জেলার সিভিল সার্জন ডা. হাবীবুর রহমান জানান, নিহতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহ্ন পাওয়া গেছে, ধস্তাধস্তির কারণেই এই জখম হয়েছে। তা ছাড়া নিহতের যৌনাঙ্গ থেকে রক্তক্ষরণের আলামত ও আঠাল পদার্থের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। সব মিলিয়ে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যায়, ভিকটিমকে হত্যার আগে ধর্ষণ করা হয়েছে।
ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে তানিয়ার বাবা গিয়াস উদ্দিন বাদী হয়ে পাঁচজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে বাজিতপুর থানায় একটি মামলা করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাজিতপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সারোয়ার জাহান ৮ মে দুপুরে পাঁচ আসামিকে আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করেন। আসামিরা হচ্ছেন বাসচালক নূরুজ্জামান, চালকের সহকারী লালন মিয়া, রফিকুল ইসলাম রফিক, খোকন মিয়া ও বকুল মিয়া। শুনানি শেষে অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক আল মামুন আটদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।