রমজানে ঝালকাঠির মুড়িপল্লীতে ব্যাপক ব্যস্ততা
রমজানে ছোলা ও চিড়ার সঙ্গে ইফতারে পূর্ণতা এনে দেয় মুড়ি। তাই রমজানে বেড়েছে মুড়ির চাহিদা। ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার ২০টি গ্রাম এবং কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার মুড়ির কারিগররা দেশের বেশিরভাগ মুড়ির চাহিদা মিটাচ্ছে। ওই সব এলাকার রাসায়নিকমুক্ত হাতে ভাজা মুড়ির চাহিদা দিন-দিন বেড়ে চলছে। দেশের চাহিদা মিটিয়ে এ মুড়ি এখন বিদেশেও রপ্তানি করা হচ্ছে।
রমজানে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার ২০টি গ্রাম এবং কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার কারিগরদের দম ফেলার ফুসরত নেই। মুড়ির সঙ্গে যেনো তাদের নাড়ির সম্পর্ক রয়েছে। গভীর রাত থেকে পরের দিন দুপুর পর্যন্ত চলে তাদের মুড়ি ভাজার ব্যস্ততা। কিন্তু প্রয়োজনীয় উপকরণের মূল্যবৃদ্ধি, কম মজুরিসহ নানা কারণে কোনোরকমে দিন চলছে কারিগরদের।
এসব এলাকার লোকজন বংশপরম্পরায় প্রায় পাঁচ যুগ ধরে মুড়ি ভেজে চলছেন। এটাই তাদের সংসার চালানোর একমাত্র পথ। আর রমজানে লেগেছে তাদের মধ্যে উৎসবের হাওয়া।
এদিকে রমজানে মুড়ির চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় হিমশিম খাচ্ছেন কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার মাছুয়াঘাটা গ্রামের শতাধিক পরিবার। এভাবেই চলছে সংসার। মুড়ি ভাজা কারিগরদের ঘামঝরা কষ্টের ফলেই ঝালকাঠির নলছিটির দপদপিয়া ইউনিয়নের রাজাখালি, তিমিরকাঠিসহ ২০টি গ্রামের এমন চিত্র ।
এসব এলাকার বিভিন্ন বাড়ি থেকেই মুড়ি কিনে নিয়ে যাচ্ছেন পাইকাররা।
তবে বর্তমানে এ এলাকায় মুড়ির ব্যাপক চাহিদা হলেও পাঁচ যুগের এ গল্পের অন্য অধ্যায়টা সুখের না। পাইকারদের পদচারণায় বাজার মুখর থাকলে বর্তমানে কারিগররা তেমন সুখে নেই।
স্থানীয় এক কারিগর (৪৫) বলেন, ‘বাজার থেকে লবণ, চাল, লাকড়ি এবং সব খরচ দিয়ে প্রতিদিন ২০০-৩০০ টাকা থাকে।’ তিনি আরো বলেন, ‘প্রতিদিন কুমারখালী রেলস্টেশনের পাশে মুড়িরবাজার থেকে মুড়ি কিনে নিয়ে যাচ্ছেন দেশের বিভিন্ন স্থানের পাইকাররা।’
কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাফফারা তাসনীন জানান, আগে ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ যেটি ছিল তা বর্তমানে ‘আমার বাড়ি আমার খামার’ হয়েছে। সেই প্রকল্পের আওতায় থেকে তাদের সমিতির থেকে ঋণ দান করা হচ্ছে।
তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ মানুষগুলোর জীবনমানের উন্নয়ন ও ভেজালবিরোধী অভিযান জোরদার করলে ভেজালমুক্ত হাতেভাজা মুড়ির চাহিদা আরো বাড়বে, ক্রেতারা পাবেন ভাল মুড়ি।