স্পন্সর বিজ্ঞাপন বন্ধে উচ্চ আদালতের রায়ের পর করণীয় ঠিক করছে অ্যাটকো
স্পন্সর বিজ্ঞাপন বন্ধে উচ্চ আদালতের দেওয়া রায়ের পর টেলিভিশন মালিকদের পক্ষ থেকে করণীয় ঠিক করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন ওনার্সের (অ্যাটকো) সভাপতি অঞ্জন চৌধুরী। বুধবার বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে সংগঠনটির পরিচালকদের বোর্ডের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
বেসরকারি টেলিভিশন মালিকদের সংগঠন-অ্যাটকোর সভাপতি বলেন, হাইকোর্ট থেকে রায় এসেছে, মহামান্য আদালত বলেছেন যে টিভি নিউজের আগে কোনো বিজ্ঞাপন দেওয়া যাবে না। এ ব্যাপারে আমরা একটু শঙ্কিত, এ নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। আদালতের কাছে আমরা কিভাবে আগাব সে বিষয়ে আমরা চিন্তা ভাবনা করছি।
আর ১২ মে থেকে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সম্প্রচারে দেশের সব টেলিভিশন চ্যানেল প্রস্তুত আছে বলেও জানান অঞ্জন চৌধুরী। তিনি বলেন, আমরা খুব আগ্রহভরে এটার জন্য অপেক্ষা করছি, আমরা খুবই আনন্দিত। এর মাধ্যমে নিরবচ্ছিন্নভাবে সম্প্রচারের জন্য যা যা পদক্ষেপ নেওয়া দরকার, আমরা আশা করি কর্তৃপক্ষ সেগুলো করবেন।
আগামী জুন মাসে আসছে অর্থবছরের বাজেটের আগেই জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গেও বেশ কিছু বিষয় নিয়ে অ্যাটকোর পক্ষ থেকে আলোচনা করা হবে বলে জানান অঞ্জন চৌধুরী।
বিজ্ঞাপনের জন্য অ্যাড এজেন্সির সঙ্গে সমন্বয় ও টিআরপি সঠিকভাবে নির্ণয়ের জন্যও বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানান অঞ্জন চৌধুরী।
বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে সংবাদের সময় কোনো ধরনের বাণিজ্যিক স্পন্সরের বিজ্ঞাপন প্রচারে গত ৬ মে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন হাইকোর্ট। আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে। বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার এই আদেশ দেন।
পর্যবেক্ষণে হাইকোর্ট বলেন, আমরা টিভির খবরগুলো দেখতে চাই স্বচ্ছতার সঙ্গে। কিন্তু খবরগুলো যদি স্পন্সর হয়ে যায়, তাহলে তো এই স্বচ্ছতা আর থাকল না।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মাসুদ আহমেদ সাঈদ। তাঁকে সহযোগিতা করেন আইনজীবী আবুল কাশেম ও শেখ তাহসান আলী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস।
আদেশের পর ব্যারিস্টার মাসুদ আহমেদ সাঈদ সাংবাদিকদের বলেন, টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে প্রায়ই আমরা ‘ইসলামী ব্যাংক বাণিজ্য সংবাদ’, ‘অ্যাপোলো হাসপাতাল স্বাস্থ্য সংবাদ’ শিরোনামে স্পন্সর সংবাদ দেখতে পাই। আদালতের আদেশ অনুযায়ী, এ ধরনের স্পন্সর বিজ্ঞাপন দিয়ে ১ সেপ্টেম্বর থেকে আর সংবাদ পরিবেশন করা যাবে না।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১১ সালে স্কুলশিক্ষক এমএ মতিন হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করেন। রিটে বলা হয়, সংশ্নিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে বিজ্ঞাপন নিলে সেই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে করা সংবাদের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়।
জানা গেছে, রিটকারী এমএ মতিন মারা গেছেন। পরে ওই রিটে ফারুক মো. হাসিব নামের এক ব্যবসায়ী পক্ষভুক্ত হন। এরপর রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করেন। রিটে স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেসরকারি বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলের মালিকসহ মোট ২৪ জনকে বিবাদী করা হয়।