শহরে স্বস্তির বৃষ্টি
টানা কয়েক দিনের তীব্র গরমে অতিষ্ঠ রাজধানীর বাসিন্দারা। প্রয়োজন ছিল শীতল আবহাওয়ার। আর সেই প্রয়োজন মেটাতেই যেন রাজধানীর বুকে নেমে এসেছে স্বস্তির বৃষ্টি। তবে এই বৃষ্টি ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’রই প্রভাব। যে ঘূর্ণিঝড়ের আতঙ্কে রয়েছে সারা দেশ।
আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টায় রাজধানীতে শুরু হয় এই বৃষ্টি। শুরুতে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হলেও পরে তা রূপ নেয় মুষলধারে ও দমকা হাওয়ায়।
দুপুর সাড়ে ১২টায় আবহাওয়া কার্যালয় থেকে এনটিভি অনলাইনকে বলা হয়, রাজধানীতে ১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর ফলে আজ দুপুর সাড়ে ১২টায় তাপমাত্রা কমে ২৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে গেছে।
এর আগে টানা কয়েক দিনের তীব্র দাবদাহে থমকে গিয়েছিল রাজধানীর বাসিন্দারা। তাপমাত্রা ছিল ৩৭ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত। এমনকি গরমের প্রভাবে বেড়ে গিয়েছিল পানির চাহিদা। আর এ জন্যই রাস্তায় দূষিত পানি ও শরবত পান করে পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়েছেন অনেকেই। বেড়ে গিয়েছিল ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। হিমশিম খাচ্ছিলেন চিকিৎসকরা। আর এ জন্যই সামান্য বৃষ্টির প্রয়োজন ছিল রাজধানীবাসীর। তবে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র প্রভাবে পরবর্তী সময়ে আরো বৃষ্টিপাত হতে পারে রাজধানীতে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ যতই বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে আসছে, পরিবর্তন হচ্ছে দেশের আবহাওয়া। বৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে কোনো কোনো এলাকায় বয়ে গেছে দমকা হাওয়া।
এরই মধ্যে ভারতের ওডিশা উপকূলে ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটার বেগে আঘাত হেনেছে ‘ফণী’। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, তিন থেকে ছয় ঘণ্টা ধরে ভারতের ওডিশা উপকূলে থাকবে ‘ফণী’র প্রভাব। এর পর ক্রমেই উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের দিকে অগ্রসর হবে ঘূর্ণিঝড়টি। পরে আগামীকাল সকালে দুর্বল হয়ে পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হানবে এটি।
আবহাওয়ার সর্বশেষ বার্তায় বলা হয়েছে, এটি আজ শুক্রবার সকাল ৬টায় মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৭০ কিলোমিটার পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৯০ কিলোমিটার পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল।
এটি আরো উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আজ মধ্যরাত নাগাদ খুলনা ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এলাকায় পৌঁছাতে পারে। খুলনা ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় আজ দুপুর থেকে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র অগ্রবর্তী অংশের প্রভাব শুরু হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৮০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ২০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।