ভৈরবের বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে চুরির হিড়িক
কিশোরগঞ্জের ভৈরব শহরের বিভিন্ন অলি-গলি, সড়ক-মহাসড়কের বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে চুরির হিড়িক পড়েছে। রাত তো বটেই, অনেক সময় দিনেদুপুরে ঘটছে চুরির ঘটনা। এতে ব্যবসায়ী মহলে আতঙ্কসহ চরম হতাশা বিরাজ করছে।
পুলিশ, কমিউনিটি পুলিশ, নৈশকালীন পাহারাদার থাকা সত্ত্বেও একে একে এমন চুরির ঘটনা ঘটলেও, সবাই যেনো নির্বিকার। এইসব চুরি বন্ধে যেনো কারো নেই কোনো দায়বদ্ধতা। ফলে সুরাহা হচ্ছে না একটি ঘটনারও। এতে চুরি বন্ধ না হয়ে ক্রমাগতই যেনো বেড়ে চলেছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, চুরির ধারাবাহিকতায় গত সোমবার দিবাগত রাতে ভৈরব বাজারের ডাইলপট্টি এলাকায় উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. রফিকুল ইসলামের ঠিকাদারী ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান মেসার্স মুমিনুল হকের অফিস কক্ষের ড্রয়ার ভেঙে ৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা লুটে নেয় চোরচক্র। অফিসের উপরের টিনের চালা কেটে কক্ষে ঢুকে এই চুরি করে চোরচক্রটি।
একই রাতে ভৈরব বাজার নদীরপাড় এলাকার সুলতান মিয়া গলিতে তেলমিলের অফিসকক্ষের শাটার ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে চোর। পরে টেবিলের ড্রয়ার ভেঙে লুটে নেয় ৭ হাজার টাকা।
শনিবার রাতে ভৈরব উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান, মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ মো. সায়দুল্লাহ মিয়ার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান মেসার্স সায়দুল্লাহ মিয়ার গুদামঘর থেকে এক লাখ টাকা মূল্যের ফ্রেশ সয়াবিন তেলের গ্যালন, বোতল ও ফ্রেশ পাস্তুরিত তরলদুধের প্যাকেট চুরি করে নিয়ে যায় চোর।
এর আগের রাতে সায়দুল্লাহ মিয়ার মেয়ের জামাই মোবারক মিয়ার নদীরপাড়ের দোকানের ভাড়াটিয়া জ্বালানি তেল ব্যবসায়ী মোস্তফা মিয়া ও দ্বীন ইসলামের ক্যাশবাক্স ভেঙে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা লুটে নেয় চোর।
২২ এপ্রিল ভৈরব-কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়কের ভৈরব বাসস্ট্যান্ড র্যাব অফিসের সামনের রাফিউল গিফট স্টোর ও বিকাশ এজেন্ট সেন্টারের দোকানের তালা ভেঙে দুপুর আড়াইটার দিকে কয়েকটি অপপো মোবাইল সেট, টাকা লুটে নেয় চোরচক্র।
এর কিছু দিন আগে এর ঠিক কয়েকগজ দূরত্বের সনি র্যাংগস শো-রুমের তালা ভেঙে দুপুর দেড়টার দিকে ভেতরে ঢুকে টাকা, মোবাইল সেট, এলএডি টিভি ইত্যাদি লুটে নেয় চোরচক্র।
ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগ, ঘটনা ঘটার পর পুলিশের পরামর্শে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করলেও লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধার বা চোরদের ধরতে পুলিশের তৎপরতা দেখতে পাননি।
ধারাবাহিক এইসব চুরির বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ভৈরব চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আলহাজ আব্দুল্লাহ আল মামুন চুরি বন্ধে পুলিশ প্রশাসনকে কঠোর অবস্থান গ্রহণের আহ্বান জানান।
জানতে চাইলে ভৈরব কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সভাপতি আলহাজ মো. হুমায়ুন কবির জানান, পুলিশ প্রশাসনের অসহযোগিতার ফলে ভৈরবের কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়েছে। প্রথমে ৩০/৩৫ জন সদস্য নিয়ে এই বাহিনী গঠন করা হলেও, বর্তমানে মাত্র পাঁচ-সাতজন দায়িত্ব পালন করছে। আর এই অল্পসংখ্যক লোক দিয়ে এতো বিশাল এলাকার নিরাপত্তা বিধান করা অসম্ভব বিষয়।
ধারাবাহিক এসব চুরির বিষয়ে জানতে চাইলে ভৈরব শহর পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বরত উপপরিদর্শক মো. শরীফুল ইসলাম জানান, চোরচক্রটিকে গ্রেপ্তার এবং চুরিরোধে পুলিশী তৎপরতা অব্যাহত আছে। শিগগিরই তারা পুলিশের জালে আটকা পড়বে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।