বিচারপতিদের ফুলকোর্ট সভা বৃহস্পতিবার
সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিদের অংশগ্রহণে আগামী বৃহস্পতিবার ফুলকোর্ট সভা ডেকেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।
আজ মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (প্রশাসন ও বিচার) মোহাম্মদ আক্তারুজ্জামান ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘নির্দেশিত হয়ে জানানো যাচ্ছে যে, আগামী বুধবার (২ মে) বিকেল ৩টায় বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতিদের অংশগ্রহণে সুপ্রিম কোর্টের জাজেজ লাউঞ্জে ফুলকোর্ট সভা অনুষ্ঠিত হবে।’
গত ২৮ এপ্রিল মামলার জট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, সুপ্রিম কোর্টে বর্তমানে এত মামলা যে ফাইল রাখার জায়গা নেই। এক কথায় ক্রিটিক্যাল অবস্থা। এভাবে চলতে পারে না। এর সমাধান বের করতে হবে।
এর আগে ২৭ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের অডিটরিয়ামে জুডিশিয়াল রিফর্ম কমিটি ও জার্মান ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন বাংলাদেশ (জিআইজেড) আয়োজিত দেশের মামলার বিচার-সংক্রান্ত এক নিরীক্ষা প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
প্রতিবেদন প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘জিআইজেডের উপস্থাপন করা সুপ্রিম কোর্টের মামলার নিরীক্ষা প্রতিবেদন দেখে আমি প্রায় বিব্রত। এত মামলা! এভাবে চলতে পারে না।’
‘আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, মামলাজট নিরসন বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের সব বিচারপতিকে নিয়ে বসব। সবাইকে বলব যে এ অবস্থায় কী করবেন, আপনারা দেখেন।’
প্রধান বিচারপতি আরো বলেন, ‘বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে প্রায় পাঁচ লাখ ২৫ হাজার মামলা বিচারাধীন। ১৯৮২ সালে ছিল মাত্র ২৫ হাজার। আর আগাম জামিনের আবেদনগুলো যদি নিষ্পত্তি না করা হতো, তাহলে বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে মামলার পরিমাণ ১০ লাখ ছাড়িয়ে যেত।’
প্রধান বিচারপতি বিচারব্যবস্থার বিদ্যমান অবস্থা তুলে ধরার পাশাপাশি মামলাজট ও এর সমস্যা থেকে উত্তরণের বিষয়ে মতামত তুলে ধরেন। আর বিচারাধীন মামলার তুলনায় বিচারকের অপর্যাপ্ততা তুলে ধরে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘প্রতিদিন মামলাজট বেড়েই চলেছে। বাংলাদেশে প্রতি ১০ লাখ লোককে মাত্র ১০ জন বিচারক বিচারিক সেবা দিচ্ছেন।’
বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির একটি নিরীক্ষা তুলে ধরে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলোতে ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ মামলা পারস্পরিক বোঝাপড়া বা বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির মাধ্যমে নিষ্পত্তি হয়ে থাকে। সেখানে বড় জোড় ১০ থেকে ১৫ শতাংশ মামলা নিষ্পত্তি হয় আদালতে। আর আমাদের দেশে চিত্র ঠিক এর বিপরীত। এ দেশে কেবল ১০ থেকে ১৫ শতাংশ মামলার নিষ্পত্তি হয়ে থাকে বোঝাপড়া বা বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির মাধ্যমে। আর ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ মামলার নিষ্পত্তি হয় আদালতে।’
উল্লেখ্য, ফুলকোর্ট সভায় বিভিন্ন এজেন্ডা নিয়ে আলোচনা হয়। বিচার বিভাগের প্রশাসনিক কার্যক্রম কীভাবে পরিচালিত হবে সে নিয়েও ফুলকোর্ট সভায় আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হয়।