‘কফি আনান কমিশনের সুপারিশ ছাড়া রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নয়’
বাংলাদেশ সফররত জাতিসংঘের উচ্চপদস্থ তিন কর্মকর্তা আবারো জানিয়েছেন, কফি আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন ছাড়া রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে রাজি নয় জাতিসংঘ। ওই কমিশনের সুপারিশে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের রোড ম্যাপ দেওয়া আছে। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের নাগরিকত্ব প্রদানের বিষয়টি সেই রোড ম্যাপে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
আজ শুক্রবার বিকেলে কক্সবাজারের হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার হাইকমিশনার ফিলিপো গ্র্যান্ডি, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) মহাপরিচালক অ্যান্তোনিও ভিটোরিনো এবং জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয় দপ্তরের প্রধান ও জরুরি ত্রাণ সমন্বয়কারী মার্ক লোকক।
রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য তাঁরা বাংলাদেশে এসেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার তাঁরা কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবিরগুলো পরিদর্শন করেন। পাশাপাশি রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে জাতিসংঘ পরিচালিত বিভিন্ন প্রকল্পের কর্মকাণ্ড পরিদর্শন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা বলেন, ‘প্রত্যেক মানুষেরই অবাধে চলাচলের স্বাধীনতা রয়েছে। আমরা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেছি, তাঁরা সেখানে নাগরিকত্ব, চলাচলের অবাধ স্বাধীনতা, চাকরি থেকে শুরু সর্বক্ষেত্রে নাগরিক অধিকার হিসেবে প্রাপ্ত সব অধিকার রোহিঙ্গাদের দেওয়ার বিষয়টি মায়ানমারকে নিশ্চিত করতে হবে। আমরা সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।’
গত বছরের জুন মাসে মিয়ানমারের সঙ্গে জাতিসংঘের সমঝোতা স্মারক বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তাঁরা।
সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয়দের চাকরি দেওয়া প্রসঙ্গে মার্ক লোকক বলেন, ‘আমরা খুব সুন্দর একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছি। এ জন্য জাতিসংঘের কাছে ১ বিলিয়ন ডলার (প্রায় সাড়ে ৮শত কোটি টাকা) সাহায্য চাওয়া হয়েছে। ১০ লাখ রোহিঙ্গা এবং ৩ লাখ স্থানীয় জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করেই প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছে।’
ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের ব্যাপারে এক আন্তর্জাতিক সাংবাদিক জানতে চাইলে, আইওএমের মহাপরিচালক অ্যান্তোনিও ভিটোরিনো বলেন, ‘ভাসানচরে যাওয়া-না যাওয়া রোহিঙ্গাদের সদিচ্ছার উপর নির্ভর করে। বিষয়টি চিন্তার। আমাদের দেখতে হবে সেখানে আদৌ থাকার পরিবেশ আছে কিনা।’
গত ২৪ এপ্রিল ঢাকা পৌঁছেই জাতিসংঘের এই তিন কর্মকর্তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেনসহ রাষ্ট্রের উচ্চ পদস্থ সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে রোহিঙ্গা বিষয়ে আলোচনা করেন।