ভৈরবে ছাত্রলীগনেতা হত্যা মামলার প্রধান আসামি ফের গ্রেপ্তার
কিশোরগঞ্জের ভৈরবের বহুল আলোচিত ছাত্রলীগনেতা অ্যাডভোকেট ইসমাইল হোসেন পলাশ হত্যা মামলার প্রধান আসামি ছাব্বির হোসেন মামুনকে দেশীয় অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় মামুনের সহযোগী মাদক ও ছিনতাই মামলার আসামি সোহান ওরফে শাওনকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোখলেছুর রহমান জানান, আজ বৃহস্পতিবার ভোরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শহরের কমলপুর এলাকার জনৈক জিল্লু মিয়ার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মামুন ও তার সহযোগী শাওনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছে থাকা একটি চাপাতি, একটি ছুরি ও একটি চায়নিজ চাকু উদ্ধার করে পুলিশ। পরে দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাদের জেলহাজতে পাঠানো হয়।
মামুনের বাড়ি ভৈরব শহরের ভৈরবপুর উত্তরপাড়া ও শাওনের বাড়ি গাছতলাঘাট এলাকায়।
পুলিশ জানায়, মামুন এর আগেও ২০১৬ সালের ২৫ নভেম্বর শুক্রবার রাত ১১টার দিকে সাজ্জাদ হোসেন নামের এক সহযোগীসহ শহরের নাভানা সিএনজি স্টেশনের পেছন থেকে গ্রেপ্তার হয়। পরে জেল থেকে জামিনে বের হয়ে গা ঢাকা দেয়।
ভৈরবে উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও কিশোরগঞ্জ জজকোর্টের শিক্ষানবিশ আইনজীবী মো. ইসমাইল হোসেন পলাশ ২০১৬ সালের ৭ মার্চ সোমবার গভীর রাতে একদল ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে নিহত হন। ভৈরব বাসস্ট্যান্ড থেকে রিকশায় করে শহরের চণ্ডীবের এলাকায় শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার পথে বাবুল কমিউনিটি সেন্টার এলাকায় একদল ছিনতাইকারী তাঁর গতিরোধ করে এবং সঙ্গে থাকা সর্বস্ব লুটে নিয়ে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।
পরে স্থানীয় এক রিকশাচালকের মাধ্যমে খবর পেয়ে স্বজনরা পলাশকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
পলাশ ভৈরব উপজেলার আগানগর ইউনিয়নের আগানগর দক্ষিণ গ্রামের আওয়ামী লীগনেতা মরহুম হাসিম মেম্বারের ছেলে ছিলেন। সেখানে তিনি শিশু বিদ্যাপীঠ নামে একটি কিন্ডার গার্টেন স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
ঘটনার দুদিন পর ৯ মার্চ পলাশের ছোট বোন শারমিন সুলতানা পুতুল বাদী হয়ে সাতজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো পাঁচ-ছয়জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। এই মামলায় পুলিশ শহরের ভৈরবপুর এলাকার চিহ্নিত ছিনতাইকারী রূপককে (২০) গ্রেপ্তার করে। রূপক ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলে পলাশ হত্যার রহস্য উন্মোচিত হয়। সেখানে তিনি ওই হত্যাকাণ্ডে জড়িত মামুন, নিবিড়সহ এলাকার আরো কয়েক ছিনতাইকারীর নাম জানান।
এরপর মামুন-নিবিড়সহ সন্দেহভাজন অন্য হত্যাকারীরা গা-ঢাকা দেয়। এর কিছুদিন পর ভৈরব-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের বাজিতপুর এলাকা থেকে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত নিবিড়ের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
পলাশের মৃত্যুর পর বিচার দাবিতে ভৈরব উপজেলা ছাত্রলীগ, ভৈরব কিন্ডার গার্টেন অ্যাসোসিয়েশন মহাসড়ক অবরোধ, মানববন্ধনসহ ধারাবাহিক বিভিন্ন বিক্ষোভ কর্মসূচি গ্রহণ করে আন্দোলনে নামে।