পোশাক খাতে শ্রমিক অধিকারের বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে না মালিকপক্ষ
বাংলাদেশের পোশাক খাতে মালিকপক্ষ রপ্তানি বাড়াতে ও ব্যবসা টিকিয়ে রাখার বিষয়ে প্রাধান্য দিলেও শ্রমিক অধিকারের বিষয়ে পর্যাপ্ত গুরুত্ব দিচ্ছে না। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) এক গবেষণা প্রতিবেদনে এমনটি উঠে এসেছে।
রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর কারখানার মানোন্নয়নে মালিকদের যে অধিক ব্যয় হয়েছে, তার ভার বিদেশি ক্রেতাদের গ্রহণ না করার বিষয়টিও উঠে এসেছে এই গবেষণায়।
‘তৈরি পোশাক খাতে সুশাসন : অগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এই গবেষণা কর্মের জন্য ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরের ৮০টি কারখানা নিয়ে জরিপ চালায় টিআইবি। পাশাপাশি গবেষণার জন্য তথ্য নেওয়া হয়েছে এই খাত সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি সংস্থা থেকেও।
মঙ্গলবার প্রকাশিত এই গবেষণা প্রতিবেদনে তৈরি পোশাক খাতের উন্নয়নে আইন প্রণয়ন, সরকারি নীতি সহায়তা, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ বেশ কিছু অগ্রগতির কথা তুলে ধরা হয়েছে। তবে সরকার, কারখানা মালিক এবং শ্রমিক- এই তিন গোষ্ঠীর মধ্যে শ্রমিকদের অগ্রগতি সবচেয়ে কম বলে উল্লেখ করা হয়।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘যারা এ খাতে ব্যবসা করছেন তারা আগের তুলনায় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছেন— এটি ঠিক এবং যে কারণে তারা অতিরিক্ত রেয়াতগুলো পাননি। সেই কারণে সেটা হয়তো আমরা মেনে নেই। কিন্তু এটার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়ে যে শ্রমিকদের অধিকারের যে বিষয়গুলো, সেগুলোতে সরকারের পক্ষ থেকেও আমরা দৃষ্টি পাই না। মালিকপক্ষের প্রভাবে সেটি হয়।’
২০১৩ সালে সাভারের রানা প্লাজা ধসের পর তৈরি পোশাক খাতের অবকাঠামো এবং আইনি ক্ষেত্রে বেশি অগ্রগতি হয়েছে। কারখানার পরিবেশ উন্নত হয়েছে, এই খাতের শ্রমিকদের মজুরিও বেড়েছে। মালিকদের বর্ধিত এই ব্যয়ের কোনো ভাগ বিদেশি ক্রেতারা বহন করেননি। এমনকি পোশাকের মূল্যও বাড়াননি।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, এই কমপ্লায়েন্সের কারণে যে বাড়তি ব্যয়টি তার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ মূল্য নির্ধারণেও রাজি হননি বিদেশি ক্রেতারা। দুই পক্ষেই যারা ব্যবসা করছেন তারাই সুবিধা পাচ্ছেন।
বাংলাদেশের আইনে মাতৃত্বকালীন ছুটির কথা ২৪ সপ্তাহ বলা থাকলেও পোশাক শিল্প শ্রমিকদের জন্য এই ছুটি ১৬ সপ্তাহ উল্লেখ করে টিআইবি নির্বাহী পরিচালক এই বৈষম্য দূর করার দাবি জানান।