ঘোড়াদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০০২ ব্যাচের বন্ধুদের মিলন মেলা
বন্ধু শক্তি, বন্ধু প্রেরণা- এই স্লোগান নিয়ে নরসিংদীর ঘোড়াদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি ২০০২ ব্যাচের নৌকাভ্রমণ ও বনভোজন ২০১৯ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার সকালে নরসিংদীর বিবিনশা ঘাট থেকে মরিচাকান্দি মরিচা বালুর মাঠের উদ্দেশে যাত্রা করেন ২০০২ ব্যাচের বন্ধুরা।
এর পর সকাল ১০টায় নৌকায় সকালের নাস্তা সেরে নেন সবাই। উপকরণ হিসেবে ছিল সিদ্ধ ডিম, পাউরুটি ও মুরগির মাংসের ভুনা। এ সময় নদীর দুই কুলে প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করেন বন্ধুরা। সাড়ে ১০টায় গন্তব্য স্থানে পৌঁছার পর বালুরচরে বন্ধুদের নিয়ে চারটি টিম করে মেতে ওঠেন ফুটবল (নকআউট) খেলায়। কেউ বা মেঘনায় সেরে নেন গোসল, কেউ বা ব্যস্ত রান্নার কাজে।
দুপুরে নৌকাতেই তাঁরা খাওয়া-দাওয়া সারেন। খাবার শেষে বালুরচরে প্রাকৃতিক মনোরম দৃশ্য উপভোগ করতে বের হন সবাই। পরে বিকেলে বাঞ্ছারামপুর সলিমগঞ্জ বাজারে ঘুরতে যান সবাই। এ সময় সেখানকার দই-মিষ্টি দিয়ে বিকেলে হালকা খাবার সেরে নেন। পরে ফুটবল খেলায় বিজয়ী ও রানারআপ দলকে ট্রফি দেওয়া হয়। বন্ধুদের একটি গল্পের বই, সিরামিকের মগ, কলম, চিরুনি, সেভিং রেজার ও পানির পট উপহার দেওয়া হয়। এ সময় ছাত্র রাজনীতিতে বিশেষ অবদান রাখার জন্য ঘোড়াদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০০২ ব্যাচের পক্ষ থেকে বন্ধু কাজী মেহেদী হাসানকে সম্মাননা স্মারক উপহার দেন। পরিশেষে বিকেলে নরসিংদীর উদ্দেশে নৌকা যাত্রা শুরু হয়। এ সময় বন্ধুরা সেলফি তুলতে ব্যস্ত সবাই। মেঘনা নদীর বুকে বিকেলে পর্যন্ত সূর্যটা সবার মন কেড়ে নেন।
ঘুরতে আসা কাজী মেহেদী হাসান বলেন, বন্ধুদের কাছ থেকে সম্মাননা স্মারক উপহার পেয়ে নিজেকে ধন্য মনে করছি। সারা জীবন যেন বন্ধুদের পাশে থাকতে পারি। আমরা ২০০২-এর নৌকা ভ্রমণ ও বনভোজন উপলক্ষে বন্ধুদের এক মিলন মেলা আয়োজন করেছি। শহরের যান্ত্রিকতা কাটিয়ে একটি নিরিবিলি পরিবেশে বন্ধুদের নিয়ে ঘোরাঘুরি করে মনে প্রশান্তি আসে। তাই প্রতি বছর নৌ-ভ্রমণের আয়োজন করব।
আরেক বন্ধু নূর আহমেদ বলেন, ১৭ বছর পর বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করব বলে মালদ্বীপ থেকে চলে এসেছি। তাই নিজেকে অনেক সৌভাগ্যবান মনে হচ্ছে। আমি সবাইকে আবারও বলব বন্ধু শক্তি, বন্ধু প্রেরণা। শুধু আমি নয়, ঢাকা থেকে অনেক বন্ধু আজ আমাদের সাথে নৌ-ভ্রমণে যোগদান করেছেন।
ঘুরতে আসা বন্ধু শরিফ উদ্দিন বলেন, সুদীর্ঘ ১৬ বছর পর গতবার প্রথম নৌভ্রমণ করি। এবারও আমরা ‘ঘোড়াদিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ব্যাচ-২০০২’ নৌকাভ্রমণের মাধ্যমে কিছু বন্ধুবৎসল পাগলা একত্রিত হলাম। ঐতিহাসিক এ সম্মিলনে বার বার মনে উদয় হলো আমরা ক্লাসে আছি। মন চায় আবার সেই দশম শ্রেণিতে ফিরে যেতে। শিক্ষকদের শাসন, পড়া না পারলে বেতের বাড়ি, নেইল ডাউন, দুষ্টুমি, স্কুল পালানো, টিফিনের পর পালানো ও সহপাঠীর সঙ্গে খুনশুটি ইত্যাদি খুব মিস করি।
ঘুরতে আসা শাকিল আহম্মেদ বলেন, এটি নৌকাভ্রমণ নয়, এটি আমাদের ব্যাচের বন্ধুদের সঙ্গে একত্রিত হওয়ায় এক মিলন মেলায় রূপান্তরিত হয়েছে। এই বন্ধুত্ব যেন জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত বজায় থাকবে আমার বিশ্বাস।
রাত ৮টায় নরসিংদীর বিবিনশা ঘাটে ফিরে এসে নিজ নিজ গন্তব্যে চলে যান বন্ধুরা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন নূর আহমেদ, পাভেল ভূইয়া, সাজ্জাদ হোসেন, শাকিল আহমেদ, শরীফ মিয়া, লক্ষন বর্মন, পারভেজ মিয়া, কাজী মেহেদী হাসান, রাশেদ চৌধুরী, মুমিনুল ইসলাম, সাদেকুর রহমান, মনির হোসেন, সুমন ফরাজি, সুমন বাপ্পী, রুমন, মুক্তার হোসেন, মনির মিয়া, সুমন মিয়া, দীপু আহমেদ, ইয়ামিন মিয়া, নজরুল ইসলাম, খোকন সূত্রধর, হেলাল মিয়া, রাকিবুল কিবরিয়া, আকরাম মিয়া, রাজীর মিয়া, ইলিয়াস মিয়া, মামুন মিয়া, সাজ্জাদ, আনোয়ার জিয়া বাবু ও জিয়া আহমেদ।
এদিকে আগামী রমজান উপলক্ষে ইফতার পার্টির আয়োজন ও ঈদ পুনর্মিলনীর উদ্যোগও নেন তারা।