জনপ্রিয়তা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে : প্রধানমন্ত্রী
তৃণমূল থেকে ঢেলে সাজিয়ে আওয়ামী লীগকে সাংগঠনিকভাবে আরো শক্তিশালী করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর টানা ক্ষমতায় থাকার পরও আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা কমার বদলে আরো বেড়েছে বলেও জানান তিনি।
আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের দলীয় কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ ও উপদেষ্টা পরিষদের যৌথ সভায় এ কথা বলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী পালন, সম্প্রতি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া নেতাদের বিষয়ে সিদ্ধান্তসহ সাংগঠনিক নানান দিক নিয়ে আলোচনা করতেই আয়োজন করা হয় এই যৌথ সভার।
যার শুরুতেই রাখা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামী বছর থেকে মুজিব বর্ষ পালনের আগেই তৃণমূলের মানুষের আর্থিক স্বচ্ছলতা নিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়েই কাজ করছে সরকার। বলেন, মুজিব বর্ষ পালন করা হবে জাতীয় ও দলীয়ভাবে। তবে তার আগে দলকে সাংগঠনিকভাবে আরো শক্তিশালী করতেও নির্দেশনা দেন সরকার প্রধান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আটটা বিভাগে আটটি কমিটি গঠন করেছি, যে কমিটির দায়িত্ব থাকবে আমাদের সংগঠনগুলোর একেবারে তৃণমূল পর্যায় থেকে আবার নতুন করে ঢেলে সাজানো বা গড়ে তোলা এবং কোথায় কমিটি আছে না আছে সেগুলো দেখা। এবং সাংগঠনিকভাবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে আরো মজবুত করে গড়ে তোলা, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।’
আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা আরো বেড়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সাধারণত রাষ্ট্র পরিচালনা করতে গেলে তাদের জনপ্রিয়তা হ্রাস পায় কিন্তু আল্লাহর রহমতে আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর থেকে জনগণের আস্থা, বিশ্বাস আমরা অর্জন করেছি। বরং জনপ্রিয়তা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।’
গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হেরে যাবে বুঝতে পেরেই বিএনপি নির্বাচনী কর্মকাণ্ডের বদলে মনোনয়ন বাণিজ্য করেছে বলেও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের দলীয় কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ ও উপদেষ্টা পরিষদের যৌথ সভায় বক্তব্য দেন। ছবি : ফোকাস বাংলা
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে যত সার্ভে করা হয়েছিল, সেই সার্ভেতে তখন থেকে স্পষ্ট যে আওয়ামী লীগকে জনগণ চায়, আওয়ামী লীগকে আবার ভোট দেবে এবং আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসবে। তাই তারা (বিএনপি) নির্বাচন করার থেকেও সিট বিক্রি করা, আর সেখান থেকে একটা বাণিজ্য করা, নমিনেশন বাণিজ্য করার দিকে তারা গুরুত্ব দিয়েছে। সেই কারণে তাদের এই হাল। যাই হোক দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ- এটাই ছিল তাদের কাজ। আজকে দেশের মানুষ অন্তত শান্তি পাচ্ছে।’
আর নির্বাচনে তাঁর দল দেশের সব শ্রেণি পেশার মানুষের সমর্থন পেয়েছে যা দেশের ইতিহাসে বিরল বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, গত সংসদ নির্বাচনে সব শ্রেণি পেশার মানুষ আমাদের সমর্থন দিয়েছে যা অতীতে কখনো দেখা যায়নি। আওয়ামী লীগ ব্যবসায়ী সমাজের পাশাপাশি কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র এবং শিক্ষকসহ সব পেশার মানুষের কাছ থেকে ব্যাপক সমর্থন পেয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো নতুন ও নারী ভোটাররা আওয়ামী লীগকে আবারও ক্ষমতায় দেখতে চেয়েছে। তাই তারা আমাদের সেবা পেতে নৌকার পক্ষে ভোট দিয়েছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা এ সময় দলের প্রেসিডিয়াম, নির্বাহী কমিটি ও উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্যদের সমন্বয়ে সদ্য গঠিত আটটি কমিটিকে তৃণমূল পর্যায় থেকে দলের পুনর্বিন্যাসের নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে একটি শক্তিশালী দলে পরিণত করা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকাকালে বিএনপি-জামায়াতের দুর্নীতি, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ এবং স্বজনপ্রীতির কারণে জনগণ তাদেরকে বর্জন করায় তাদের অবস্থা হয়েছে পরজীবির মতো।
শেখ হাসিনা দলীয় নেতাকর্মীদের বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, দলমত বর্ণ সম্প্রদায় নির্বিশেষে জাতি বাংলা নববর্ষ উদযাপন করেছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে উৎসব ভাতা দিয়েছে। তিনি ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশত বার্ষিকী উদযাপন এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের প্রস্তুতি নিতে দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান। বলেন, মুজিব বর্ষ উদযাপনে এরই মধ্যে সরকার ও জাতীয় পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে।