সোনাগাজীর সাবেক ওসির বিরুদ্ধে মামলা পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ
ফেনীর সোনাগাজী মডেল থানা পুলিশের সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলাটি তদন্ত করে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
ঢাকা সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আস-সামছ জগলুল হোসেন আজ সোমবার মামলাটি গ্রহণ করে এই আদেশ দেন। উপমহাপরিদর্শক পদমর্যাদার একজন পিবিআই কর্মকর্তাকে মামলাটি তদন্ত করতে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি নাজমুল ইসলাম শামীম।
নুসরাতের জবানবন্দির ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া ও আপত্তিকর প্রশ্ন করায় ওই ওসির বিরুদ্ধে আজ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ঢাকা সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
মামলার বিবরণ অনুসারে, যৌন হয়রানির অভিযোগে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে মামলার পর ২৭ মার্চ নুসরাতকে থানায় ডাকেন তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেম। তিনি থানায় জিজ্ঞাসাবাদের সময় ঘটনা নিয়ে নুসরাতকে আপত্তিকর ও অসহনীয় (যৌন হয়রানিমূলক) প্রশ্ন করেন।
আজ আদালতের আদেশ শেষে সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন সাংবাদিকদের বলেন, ‘তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন নুসরাতকে তাঁর রুমে নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের নামে যে ধরনের প্রশ্ন করেন, সেগুলো অশ্লীল, স্পর্শকাতর এবং ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে উনি প্রশ্ন করেন। এই ধরনের প্রশ্ন করে উনি ভিডিও ধারণ করেন এবং এই ভিডিও উনি ইউটিউব ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে সরবরাহ করেন।’
ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘আমি ট্রাইব্যুনালকে বলার চেষ্টা করেছি, এই ওসি সাহেবকে যদি অন্তত বিচারের আওতায় আনা না হয়, তাহলে বাংলাদেশের মানুষ ন্যায়বিচার এবং আইনের প্রতি থানার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে।’
সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির মৃত্যুর পর ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছে। ২৭ মার্চ মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে নুসরাত যৌন নিপীড়নের অভিযোগ করলে দুজনকেই থানায় নিয়ে যান মোয়াজ্জেম।
এরপর অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আনা যৌন হয়রানির অভিযোগ প্রত্যাহার করতে রাজি না হওয়ায় ৬ এপ্রিল মাদ্রাসার ছাদে ডেকে নিয়ে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন সিরাজের লোকজন। শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে যাওয়া নুসরাত ১০ এপ্রিল রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান।
এরপর মামলায় যথাযথ সহায়তা পাননি বলে নুসরাতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে গত ১০ এপ্রিল ওসি মোয়াজ্জেমকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।