গাজীপুরে আলেয়া হত্যায় পুত্রবধূসহ গ্রেপ্তার ৩
গাজীপুরে আলেয়া বেগমকে (৫০) গলা ও পেট কেটে খুনের ঘটনায় নিহতের পুত্রবধূ ও তাঁর দুই মামাকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। সোমবার র্যাব ১-এর পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের প্রধান লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল-মামুন এ তথ্য জানিয়েছেন।
গ্রেপ্তার হওয়া তিনজন হলেন নিহতের পুত্রবধূ গাজীপুর সিটি করপোরেশনের রাজেন্দ্রপুর চৌরাস্তা (মিয়াবাড়ী) এলাকার আরিফ হোসেনের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার লিজা (২৪), লিজার দুই মামা গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার সুর্য্য নারায়ণপুর এলাকার আমির হোসেন (৩৫) ও নূর হোসেন (২৯)।
পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল-মামুন জানান, চাকরির সুবাদে গাজীপুর ন্যাশনাল পার্কের ভেতরে বসবাস করছিলেন জসিম উদ্দিনের স্ত্রী আলেয়া বেগম (৫০)। তাঁর ছেলে আরিফ হোসেন স্ত্রী লিজাকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করতেন। গত ৯ এপ্রিল বিকেলে বাড়ির পাশের গজারিয়াপাড়ার জঙ্গল থেকে গরু আনতে যান আলেয়া। এ সময় ওত পেতে থাকা আসামিরা আলেয়া বেগমকে অপহরণ করে প্রথমে শ্বাসরোধ করে, পরে গলা ও পেট কেটে হত্যা করেন। এরপর লাশ জঙ্গলে লুকিয়ে রাখেন। বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে আলেয়া বেগমের সন্ধান না পেয়ে তাঁর স্বামী ১০ এপ্রিল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এদিকে খুনের একদিন পর ১১ এপ্রিল লাশ বাড়ির পেছনে পরিত্যক্ত পুকুরে কচুরিপানার নিচে লুকিয়ে রাখেন। ১২ এপ্রিল ওই পুকুর থেকে আলেয়ার অর্ধ গলিত লাশ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় নিহতের স্বামী জসিম উদ্দিন বাদী হয়ে গাজীপুর সদর থানায় ওই তিনজনকে আসামি করে মামলা করেন। রোববার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল-মামুনের নেতৃত্বে র্যাব ১-এর সদস্যরা কাপাসিয়া বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে মামলার তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে।
র্যাব কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল-মামুন আরো জানান, নিহতের স্বামী জসিম উদ্দিন ও তাঁদের ছেলের মামা শ্বশুররা ন্যাশনাল পার্কে পাশাপাশি দোকানে ব্যবসা করে আসছিলেন। তাঁদের মধ্যে একাধিকবার মারামারি হয়েছিল। এসব ঘটনায় নিহতের পুত্রবধূ লিজা তাঁর মামাদের পক্ষ নিয়ে শাশুড়ির সঙ্গে ঝগড়াবিবাদ করতেন। তিনজনকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, পারিবারিক ও পার্কের ভেতরে দোকান নিয়ে ব্যবসায়িক লেনদেনকে কেন্দ্র করে তাঁরা আলেয়া বেগমকে হত্যা করেছেন।
এ ব্যাপারে নিহতের স্বামী জসিম উদ্দিন জানান, প্রায় এক সপ্তাহ আগে ন্যাশনাল পার্কের দোকানের ব্যবসা নিয়ে শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে লিজা এবং লিজার মামা আমির হোসেন ও নূর হোসেনের কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় তাঁরা খুন-জখমের হুমকি দিয়ে তাঁদের পার্কের দোকানের ব্যবসা ছেড়ে চলে যেতে বলেন।