ভৈরবে আওয়ামী লীগনেতার নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা
গত ২৪ মার্চ কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলা পরিষদের ৮২টি কেন্দ্রে নির্বাচন হয়। জাল ভোট প্রদান, মারামারি ও গোলযোগের কারণে তিনটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। আগামী বুধবার শুধু ভাইস চেয়ারম্যান পদে ওই তিন কেন্দ্রে ভোট নেওয়া হবে।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে এগিয়ে থাকা যুবদলের বহিষ্কৃত নেতাকে জেতাতে একটি পক্ষ ‘নীলনকশা’ প্রণয়ন করেছে অভিযোগ তুলে বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আওয়ামী লীগনেতা মো. মোশারফ হোসেন। আজ সোমবার দুপুরে ভৈরব প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এই বর্জনের ঘোষণা দেন।
মোশারফ হোসেন বলেন, তিনি ভৈরব উপজেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক। তাঁর বাবা মরহুম হাজি মো. মতিউর রহমান ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের সভাপতি। গত ২৪ মার্চ অনুষ্ঠিত পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি তালা প্রতীক নিয়ে দলীয় এবং সর্বস্তরের জনগণের সমর্থন নিয়ে ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। কিন্তু নির্বাচনের দিন আত্মীয়তার সূত্র ধরে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী উপজেলা যুবদলের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক আল-মামুনের পক্ষে ক্ষমতাসীন দলের একটি প্রভাবশালী মহল ভোট ডাকাতির আশ্রয় নিয়ে ব্যাপকভাবে অনিয়ম শুরু করে। এর প্রতিবাদ করায় উপজেলা নির্বাচন অফিসের সহায়তায় তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা করে নির্বাচন কমিশন। ভোটের দিন তিনটি কেন্দ্রে গোলযোগের কারণে ভোটগ্রহণ স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। ওই তিন কেন্দ্রের মোট ভোটার আট হাজার ৬৭৫ জন।
৭৯টি কেন্দ্রের ফলাফলে নির্বাচনে মোশারফ হোসেন তালা প্রতীক নিয়ে ৩৯ হাজার ৩৫৫ ভোট পেয়েছেন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী আল-মামুন চাপকল প্রতীকে ভোট পান ৪৩ হাজার ৫৮০টি। আরেক প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য শহিদুল্লাহ কায়সার পান ১৫ হাজার ৩৭৩ হাজার ভোট।
২৪ মার্চের নির্বাচনে ভৈরব উপজেলা চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নৌকার প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ মো. সায়দুল্লাহ মিয়া। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়ী হন মনোয়ারা বেগম। ভোটের দিন নির্বাচনী কাজে বাধা ও কেন্দ্র দখল এবং মারামারির অভিযোগে মোশারফ হোসেনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেছে নির্বাচন কমিশন।
কিন্তু মোশারফ হোসেন আজ সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, স্থগিত কেন্দ্রেগুলোর ফলাফল তাঁর বিপক্ষে নিয়ে তাঁকে পরাজিত করতে একটি মহল নীলনকশা এঁকে চক্রান্তে নেমেছে। কাজেই বুধবারের নির্বাচনে অংশ নেওয়া অর্থহীন বলে তিনি মনে করেন। তাই ওই নির্বাচন বর্জন করছেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি ভৈরব শাখার সভাপতি আসাদুজ্জামান ফারুক। উপস্থিত ছিলেন ভৈরব পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নিয়াজ মোহাম্মদ, সাবেক কাউন্সিলর মো. হারুন অর রশিদ, ব্যবসায়ী আবু তাহের মিয়া, শফিকুল ইসলাম নোমান, ফারুক আহমেদ, নাজির হোসেন, তাঁর স্ত্রী লায়লা ফেরদৌস আরা প্রমুখ।