‘আমরা বৈশাখের ভেতরে থেকেও নেই’
বৈশাখে মেতেছে বাঙালি। পয়লা বৈশাখে নাচ, গান, ঘোরাঘুরি আর খেলায় মেতে উঠেছে তারা। আর উৎসবে মেতে ওঠা বাঙালির নিরাপত্তা দিতে তৎপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নির্বিঘ্নে নিরাপত্তা দেওয়ার কাজ করতে পারলেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বৈশাখ পূর্ণ হবে বলে জানিয়েছেন এই বাহিনীর অনেকে।
পরিবার-পরিজনের সঙ্গে বৈশাখ পালন করা হয়ে ওঠে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অধিকাংশ সদস্যের। জনসাধারণকে নিরাপত্তা দেওয়ার মধ্যেই তাঁরা বৈশাখ খোঁজে।
পয়লা বৈশাখকে কেন্দ্র করে রাজধানীর শাহবাগ, রমনা পার্ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরো অংশ নিরাপত্তা বেষ্টনী দিয়ে রেখেছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহস্রাধিক সদস্য। তাঁদের মধ্যে অন্তত ২০ জনের সঙ্গে এনটিভি অনলাইনের কথা হয়। তাঁরা জানিয়েছেন, ‘আমাদের বৈশাখ পূর্ণ হবে যদি আপনারা নিরাপত্তার ভেতরে থেকে পয়লা বৈশাখ উদযাপন করতে পারেন। তাহলেই কেবল আমরা মনে করতে পারব আপনাদের মধ্য দিয়ে আমাদের বৈশাখ পালন হয়ে গেছে।’
তাঁদের ভেতরে রাজারবাগ পুলিশ লাইনের উপপরিদর্শক (এসআই) শাহ আজম দায়িত্ব পালন করছিলেন রমনা পার্ক থেকে বের হয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভেতরে ঢোকার গেটে। তিনি বলেন, ‘আপনাদের বৈশাখ ভালোভাবে কাটলেই আমাদের বৈশাখ পূর্ণ হবে। আর যদি কোনো ঝামেলার ভেতর দিয়ে আপনারা যান, তাহলে আমাদের বৈশাখ মাটি হয়ে যাবে। আপনাদের মাঝেই আমাদের বৈশাখ। আমরা বৈশাখের ভেতরে থেকেও নেই।’
বাংলামোটর মোড়ে পুলিশ তল্লাশিচৌকি বসিয়েছে। কোনো যানবাহন প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না শাহবাগের দিকে। সেখানে দায়িত্বরত পুলিশের এসআই রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সবার ব্যাগ তল্লাশি করে ভেতরে ঢুকতে দিচ্ছি। এই তল্লাশি করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমার কাছে বৈশাখ পালন। আপনাদের বৈশাখ ভালোভাবে পালন করাতে সাহায্য করা মানেই আমার বৈশাখ পালন। আমার স্ত্রী-সন্তানকে ছেড়ে শুধু আপনাদের জন্যই কাজ করে যাচ্ছি।’
বাংলা একাডেমি থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেটে ঢুকতে একটি তল্লাশিচৌকি আছে। সেখানে দায়িত্বরত নুসরাত বলেন, ‘সকাল থেকেই বৈশাখ পালন করতে আসা মানুষদের ফুল দিয়ে বরণ করে ভেতরে ঢোকাচ্ছি। কারো কাছে কোনো ধরনের অস্ত্র বা দাহ্য পদার্থ আছে কি না, তা পরীক্ষা করছি। মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছি। এই নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই আমার কাছে বৈশাখ পালন।’
ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা জোনের উপকমিশনার (ডিসি) মারুফ হোসেন বলেন, ‘আমরা কয়েক দিন ধরে বৈশাখকে কেন্দ্র করে আপনাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছি। আমাদের পুলিশ ভাইয়েরা তাঁদের পরিবার ছেড়ে কাজ করছেন। এসব ত্যাগ আপনাদের জন্য। এটাই আমাদের পবিত্র দায়িত্ব, এটাই আমাদের বৈশাখ।’