আগুনের কয়লায় খোঁচা দিয়েন না, প্রশাসনকে শামীম ওসমান
নারায়ণগঞ্জে কোনো ব্যবসায়ী বা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীকে বিনা কারণে মিথ্যা মামলা দিয়ে বা অন্য কোনোভাবে হয়রানি করা হলে ছয় ঘণ্টার নোটিশে জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সংসদ সদস্য শামীম ওসমান। স্থানীয় প্রশাসনের উদ্দেশে তিনি বলেন, আগুনের কয়লায় কেউ খোঁচা দিয়েন না। স্ফুলিঙ্গ শুরু হলে কিন্তু আমার নেতাকর্মীদের কাউকে ঠেকাতে পারবেন না। নারায়ণগঞ্জ অগ্নিকুণ্ডে পরিণত হবে।
আজ শনিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ জেলা শহরের ইসদাইর এলাকায় বাংলাভবন কমিউনিটি সেন্টার মিলনায়তনে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জরুরি কর্মিসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রশাসনকে ইঙ্গিত করে এ হুঁশিয়ারি দেন শামীম ওসমান।
স্থানীয় প্রশাসনকে হেয় করে বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে গত ২৯ মার্চ মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শাহ নিজামের বিরুদ্ধে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন ফতুল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মঞ্জুর কাদের। এর দুইদিন পর ১ এপ্রিল রাতে ফতুল্লায় বুড়িগঙ্গা নদীর ওপর ভাসমান রেস্তোরাঁ মেরী অ্যান্ডারসনের বারে পুলিশের অভিযানে ৬৮ জন গ্রেপ্তারের ঘটনায় পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে জড়িয়ে প্রকাশ করা হয় বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক ও ব্যবসায়ী নেতা তানভীর আহম্মেদ টিটুর নাম, যিনি সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের শ্যালক। এরপর থেকে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ প্রশাসন ও শামীম ওসমানের মধ্যে বিরোধপূর্ণ সম্পর্কের বিষয়টি সামনে আসে।
দলের কর্মিসভায় শামীম ওসমান বলেন, আমার নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাবমূর্তি নষ্ট হতে দেব না। যদি কেউ মনে করেন আমার নেতাকর্মীদের ফাঁসিয়ে চাঁদাবাজি করবেন, তা হতে দেব না। আমাদের নেতাদের যদি ইচ্ছা করে কোনো ঝামেলায় জড়ানোর চেষ্টা করা হয় তাহলে এক সেকেন্ড সময় দেওয়া হবে না।
কাউকে ব্যবহার করে নারায়ণগঞ্জের শান্তিপূর্ণ পরিবেশকে নষ্ট এবং গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ না করতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান শামীম ওসমান। নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও ব্যবসায়ীদের নিয়ে ষড়যন্ত্রের খেলা না খেলতে তিনি প্রশাসনকে স্পষ্টভাবে হুঁশিয়ার করে দেন। বলেন, ‘ডোন্ট প্লে, নারায়ণগঞ্জে খেইলেন না।’
কর্মিসভায় নেতাকর্মীদের হয়রানি বন্ধ না হলে গণপদত্যাগ করার ঘোষণা দিয়ে শামীম ওসমান তাদের ধৈর্য ধারণ করে শান্ত হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারায়ণগঞ্জের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত আছেন। তারপরেও জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি তিনি উপস্থাপন করবেন। আগামী ১০-১২ দিনের মধ্যেই এর ফলাফল আসবে বলে শামীম ওসমান নেতাকর্মীদের আশ্বস্ত করেন। একই সঙ্গে তিনি কাউকে চাঁদা না দিতে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে দেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সামছুল ইসলাম ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মিসভায় আরো বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা ও সহ-সভাপতি চন্দন শীল।