বায়ুদূষণে ২০১৭ সালে সোয়া লাখ বাংলাদেশির মৃত্যু
বায়ুদূষণের কারণে ২০১৭ সালে বাংলাদেশে অন্তত ১ দশমিক ২৩ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বিশ্বজুড়ে একযোগে প্রকাশিত ‘বৈশ্বিক বায়ু পরিস্থিতি-২০১৯’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা সংস্থা হেলথ ইফেক্টস ইনস্টিটিউট (এইচইআই) এবং ইনস্টিটিউট ফর হেলথ ম্যাট্রিক্স অ্যান্ড ইভ্যলুয়েশনের (আইএইচএমই) যৌথ উদ্যোগে বুধবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদন বলছে, দক্ষিণ এশিয়ার ক্রমবর্ধমান বায়ুদূষণযুক্ত পরিবেশে কোনো শিশু বেড়ে উঠলে তার গড় আয়ু ৩০ মাস (আড়াই বছর) পর্যন্ত কমে যেতে পারে।
‘বৈশ্বিক বায়ু পরিস্থিতি-২০১৯’ প্রতিবেদন তৈরি করার সময় ১৯৯০ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বিশ্বে বায়ুর গুণগতমান বিষয়ক তথ্য নিয়ে কাজ করা হয়।
চারপাশের বায়ুদূষণের কারণে বাংলাদেশিদের আয়ু প্রায় ১ দশমিক ৩ বছর কমে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত এলাকা রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ায়। মৃত্যুঝুঁকির অন্যতম কারণের মধ্যে রয়েছে অপুষ্টি, অ্যালকোহলের অপব্যবহার ও কায়িক পরিশ্রম কম করা প্রভৃতি। তবে অন্যান্য ঝুঁকির চেয়েও বিশ্বব্যাপী বায়ুদূষণ মৃত্যুর জন্য অধিকতর দায়ী।
বায়ুতে যেসব ক্ষতিকর উপাদান আছে, তার মধ্যে মানবদেহের জন্য সবচেয়ে মারাত্মক উপাদান হচ্ছে পিএম ২.৫। এশিয়ার বায়ুর গুণমান অনেক খারাপ, বিশেষ করে বাংলাদেশের জনগণ ১৯৯০ সাল থেকে পিএম ২.৫ মাত্রার মধ্যে বসবাস করছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, বায়ুতে পিএম ২.৫ উপাদানের কারণে বিশ্বে ৩০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়, যাদের অর্ধেকের বেশি মানুষ ভারত ও চীনে বসবাস করত। এসব মৃত্যুর জন্য বিশ্বে শীর্ষে থাকা বায়ুদূষণকারী দুই দেশ ভারত ও চীন দায়ী।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ার বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও পাকিস্তান পৃথিবীর দূষিত দেশের তালিকায় শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। এসব দেশের বায়ুদূষণের কারণে ১৫ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়।
সার্বিকভাবে দীর্ঘমেয়াদি বায়ুদূষণের ফলে স্ট্রোক, ডায়াবেটিস, হার্ট অ্যাটাক, ফুসফুস ক্যানসার ও ফুসফুসের রোগে প্রায় ৫০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে ৩০ লাখ মানুষের মৃত্যুর জন্য সরাসরি পিএম ২.৫ উপাদান দায়ী।