যৌন হয়রানির শিকার হয়ে স্কুলছাত্রীর ‘আত্মহত্যা’
কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলায় নবম শ্রেণির এক ছাত্রীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। স্বজনদের দাবি, মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে।
মেয়েটির নাম চাঁদনী আক্তার মুন্নী (১৫)। তার লাশের পাশে পাওয়া চিরকুটে লেখা আছে, ‘আব্বু আমি এ কাজ ইচ্ছে করে করিনি। আমি তোমার মান সম্মান বাঁচাতে পারলাম না। আমাকে তুমি ক্ষমা করে দিও।’
গতকাল বৃহস্পতিবার নিজ বাসা থেকে চাঁদনীর লাশ উদ্ধার করা হয়। মিরপুর উপজেলার কেবিএইচ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিল চাঁদনী। সে উপজেলার কাতলমারী গ্রামের হেকমত আলী ভাষার মেয়ে। তার স্বজনরা অভিযোগ করেন, যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে সে। এ কারণেই মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে।
নির্যাতন ও আত্মহত্যার ঘটনায় চাঁদনীর পরিবার পাঁচ যুবকের বিরুদ্ধে মিরপুর থানায় মামলা করেছে। তবে পুলিশ এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
মেয়েটির পরিবার জানায়, চাঁদনী তার চাচাতো বোনের বিয়ে উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বিকেলে আমলা বাজারে ফুল কিনতে যায়। পথে একইগ্রামের বখাটে জয়নাল, মিঠুন, আঙ্গুর, রাজু এবং পারভেজ জোর করে চাঁদনীকে পাশেই আমলা আলু বীজ খামারে নিয়ে যায়। চাঁদনীর চিৎকারে লোকজন এগিয়ে গেলে বখাটেরা পালিয়ে যায়।
আমলা পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. আশরাফ চাঁদনীকে উদ্ধার করে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নারী সদস্য রেজেলা খাতুনের সঙ্গে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। মাঝপথে ওই নারী সদস্যকে হুমকি দিয়ে অটোরিকশা থামিয়ে চাঁদনীকে আবার একটি বাড়িতে নিয়ে যায় যুবকেরা। এ সময় তার ওপর শারিরীকভাবে নির্যাতন করা হয়। এ ঘটনার পর বাড়ি ফিরেই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে সে। পরে ওই ঘরে টেবিলে একটি চিরকুট পাওয়া যায়। সেখানে বখাটেদের অত্যাচারের বিষয় তুলে ধরে সে।
মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম জানান, চাঁদনীর পরিবারের পক্ষ থেকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে থানায় মামলা করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে তার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।
ঘটনা তদন্তের পাশাপাশি এর সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলেও জানান ওসি আবুল কালাম।