সেই রিপন বেঁচে আছেন, ভালো আছেন
রাজধানী বনানীর এফ আর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বেঁচে আছেন ফেসবুকে আকুতি জানানো হাসনাইন আহমেদ রিপন। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাঁকে উদ্ধার করেন।
রিপনের পরিচিত মমিনুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘তিনি (রিপন) সুস্থ আছেন। বর্তমানে ইউনাইটেড হাসপাতালে তাঁর প্রাথমিক চিকিৎসা চলছে।’
রাত ৯টার পর হাসপাতাল থেকে রিপন তাঁর ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন, ‘আমি আল্লাহর রহমতে ভাল আছি, ইউনাইটেড হসপিটাল এ আছি। যারা আহত হয়ছেন তাদের সুস্থতা কামনা করছি। আর যারা নিহত হয়েছেন তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। আমিন।’
এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে এফ আর টাওয়ারে আগুন লাগার পরে ভবনের ভেতর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সবাইকে বিদায় জানিয়ে দুটি পোস্ট দেন রিপন। তিনি এফ আর টাওয়ারে থাকা ডার্ড গ্রুপের ফিন্যান্সের এক্সিকিউটিভ বলে জানা গেছে।
দুপুরে আগুন লাগার পর ভবন থেকে সেলফি তুলেন রিপন। তিনি ওই ভবনের ১৪তলায় ছিলেন বলে জানান। রিপন লেখেন, ‘আগুন আগুন, এটা শেষ পোস্ট হতে পারে। প্লিজ ফরগিভ মি।’
এর এক ঘণ্টা পর ফেসবুকে আরেকটি পোস্ট দেন। ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন ঘরের মধ্যে সেলফিসহ দেওয়া পোস্টে রিপন প্রিয়জনদের ‘বিদায়’ জানিয়ে লেখেন, ‘মা, মিনা, মিলন, আপু, ফাহিম ভাই সবায় আমারে মাফ করে দিস।’
এরপর তাঁর দেওয়া দুটি স্ট্যাটাস ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়। রিপনের এ দুটি স্ট্যাটাসে এ পর্যন্ত প্রায় সাত হাজার মন্তব্য লেখা হয়েছে। এ ছাড়া শেয়ার করেছেন প্রায় সাড়ে আট হাজার ব্যক্তি।
বিকেলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ক্রেনের সাহায্যে ভেতরে থাকা অনেককে উদ্ধার করে ভবন থেকে। তাঁদের একজনের মধ্যে রিপন ছিলেন। রিপনের ফেসবুক বন্ধুরাও সেই পোস্টেই রিপনের উদ্ধার হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর বনানীর ১৭ নম্বর রোডের এফ আর টাওয়ারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। আগুনে এ পর্যন্ত ১৯ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ভবন থেকে উদ্ধার হওয়া অন্তত ৩০ জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা, ইউনাইটেড ও অ্যাপোলোসহ স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সিনিয়র স্টেশন অফিসার খুরশিদ আনোয়ার বলেন, ঘটনাস্থল থেকে ১৩টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ইউনাইটেড হাসপাতালে তিনজন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে দুজন ও কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে একজন মারা গেছেন।
নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে সাতজনের নাম জানা গেছে। এঁরা হলেন গোপালগঞ্জের কাশিয়ানি উপজেলার বালুগ্রামের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম মৃধার ছেলে পারভেজ সাজ্জাদ (৪৭), আমিনা ইয়াসমিন (৪০), দিনাজপুরের সদর উপজেলার বালুয়াকান্দি গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে মামুন (৩৬), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের সান্ধ্যকালীন এমবিএ কোর্সের আবদুল্লাহ আল ফারুক (৩২), মাকসুদুর (৬৬), মনির (৫০) এবং শ্রীলঙ্কার নাগরিক ও বনানীর স্কেন ওয়েল লজিস্টিকসের ব্যবস্থাপক নিরস ভিগ্নে রাজা (৪০)।