ইয়াবা থাকার কথা বলে ছিনতাই!
শামীম রহমান (১৯) ঢাকায় মাটি কাটার কাজ করেন। থাকেন রাজধানীর পশ্চিম কাজীপাড়ায়। ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলা থেকে রোববার দিবাগত রাত ১২টার দিকে কাজীপাড়া ফুটওভার ব্রিজের নিচে এসে পৌঁছান। প্রচণ্ড বৃষ্টি থেকে রক্ষা পেতে ব্রিজের ওপর ওঠেন তিনি।
ব্রিজে উঠলে আরো জোরে বৃষ্টি শুরু হয়। তখন ব্রিজ থেকে নিচে নামার জন্য হাঁটা শুরু করেন তিনি। এ সময় দুজন ছিনতাইকারী শামীমকে দাঁড়াতে বলে। দাঁড়ালে ওই দুজন তাঁকে কাজীপাড়া কেন্দ্রীয় মসজিদের গেটে (ব্রিজের সঙ্গে) নিয়ে যায়। তাঁর কাছে ইয়াবা আছে বলে ধমকাতে শুরু করে। এরপর মানিব্যাগে থাকা ১ হাজার ৪০ টাকা নিয়ে দুই ছিনতাইকারী দৌড় দেয় বলে জানান শামীম।
শামীম রহমান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমি ওভারব্রিজে উঠলে ডাকাতরা আমার পিছু পিছু আসে। আমার কাছে নাকি ইয়াবা আছে। বলে, আমি ইয়াবা বেইচ্চা খাই। খোদার কসম, আমি গ্রাম থেকে আইছি। বাস থেকে মাত্র নামলাম কাজীপাড়ায়। ওরা পুলিশের লোক বলে আমাকে কিসের একটা কার্ড দেখায়। আমি পড়তে পারি না, তাই বুঝতে পারিনি। একজন বলে উঠল, মানিব্যাগ বের কর, ওখানে ইয়াবা রাখছস। তোরে এখন ধরে নিয়ে যাব। এরপর মানিব্যাগ বের করলেই তারা উল্টায়-পাল্টায় দেইখা ফেলায়। ১ হাজার ৪০ টাকা ছিল মোট। সব টাকা নিয়ে নেয় ওরা। আমি যখন জোরে চিৎকার করতে যাব তখন তারা আমাকে বলে, কথা বললেই ফেলে দেব ব্রিজ থেকে। একদম মেরে ফেলব। এরপর আমাকে দা (ছুরি) দেখায় টাকা নিয়ে দৌড় মারে ডাকাতরা।’
এই প্রতিবেদক রোববার রাতে যখন ব্রিজে ওঠেন তখন শামীম রহমান ওই মসজিদের গেটে বসেই কাঁদছিলেন। হাতে একটি জামা-কাপড়ের পলিথিন ব্যাগ ছাড়া আর কিছুই নেই। শামীমকে নিয়ে ব্রিজের নিচে অবস্থিত একটি চায়ের দোকানে গেলে লোকজন জানান, দেখলাম ব্রিজ থেকে দুজন ছেলে নেমে পূর্ব কাজীপাড়ার দিকে দৌড় দিল। তখন তো বুঝতে পারেনি যে এই অবস্থা।
পূর্ব কাজীপাড়ায় অবস্থিত একটি মুদির দোকানদার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এখানে প্রায় ছিনতাই হয়। কাজীপাড়ার পোলাপান এই কাজ করে। একটু ফাঁকা পেলেই ছিনতাই করে পালায়। কিছু দিন আগে একজনের মোটরসাইকেল ছিনতাই হয়েছে ব্রিজের নিচ থেকে। গাড়ির চাবি কেড়ে নিয়ে তাঁকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে পালায়।
ব্রিজের নিচে রাত ১২টার পর প্রতিদিন চা-বিড়ি বিক্রি করতে বসেন দুই বয়স্ক স্বামী-স্ত্রী। তাদের ভেতর থেকে স্ত্রী বলেন, ‘এখানে মাঝে মাঝে এমন ছিনতাই হয়। বাসা বাড়িতেও কাজীপাড়ায় মাঝে মাঝে ডাকাতি হয়, চুরি হয়। দেখার কেউ নেই।’