‘নারীর উন্নয়নে বাংলাদেশ অনেক অগ্রসর হয়েছে’
ইউবিআর বাংলাদেশ অ্যালায়েন্স, হ্যালো আই অ্যাম কনসোর্টিয়াম ও আরএইচআরএন প্ল্যাটফরমের যৌথ আয়োজনে আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০১৯ উদযাপন করা হয় গত রোববার, ধানমণ্ডির ছায়ানট ভবনে। এবারের ৮ মার্চ নারী দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল ‘থিংক ইক্যুয়াল, বিল্ড স্মার্ট, ইনোভেট ফর চেঞ্জ’; বাংলায় এর অর্থ : সবাই মিলে ভাবো, নতুন কিছু করো, নারী-পুরুষ সমতার নতুন বিশ্ব গড়ো। সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সৃষ্টিশীল হওয়ার ব্যাপারেই এবারের নারী দিবস আমাদের তাগিদ দিচ্ছে।
জাতীয় সংসদের মহিলা ও শিশুবিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি এমপি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন নেদারল্যান্ডসের বাংলাদেশের দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত হ্যারি ভারওয়েইজ ও জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের বাংলাদেশ প্রতিনিধি ড. অসা টর্কেলসন।
সংসদ সদস্য মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, ‘বাংলাদেশের জনসংখ্যার অর্ধেক নারী। নারীর উন্নয়নে বাংলাদেশ অনেক অগ্রসর হয়েছে।’ তিনি নারীর ক্ষমতায়ন ও অধিকার নিশ্চিত করতে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন সাফল্য তুলে ধরেন। তিনি আরো উল্লেখ করেন, কর্মক্ষেত্রে অংশগ্রহণ, রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানে নেতৃত্বের ভূমিকা এবং ব্যবসা উদ্যোগে প্রবেশাধিকার নারীর ক্ষমতায়নকে নিশ্চিত করছে। নারী-পুরুষের সমতা অর্জনে সরকারের এ উদ্যোগকে সফল করতে বেসরকারি সংস্থাসহ সবাইকে এগিয়ে আসতে বলেন তিনি।
হ্যারি ভারওয়েজ সম্মিলিত এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, তার সরকার নারী ও মেয়েশিশুদের লিঙ্গ সমতা অর্জনে দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করেছে। নারীর প্রতি সকল সহিংসতা প্রতিরোধ, রাজনীতিতে সমনাগরিকত্ব, অর্থনেতিক স্বাধীনতা ও সমাজের সকল স্তরে নারী-পুরুষের ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থানের জন্য ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করেছে। তিনি আরো বলেন, ‘নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। নেদারল্যান্ডসের বাংলাদেশ দূতাবাসের অংশগ্রহণে এ ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজনকারী বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার সঙ্গে যুক্ত থেকে আগামীতে আরো কাজ করার আশা ব্যক্ত করেন।’ আগামীতে নারী ও মেয়েদের প্রযুক্তির ব্যবহারে অভিগম্যতা, সিদ্ধান্তমূলক অংশগ্রহণের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের ওপর জোর দেন তিনি।
ড. অসা টর্কেলসন বলেন, ‘যেকোনো জাতির জেন্ডার সমতা অর্জনের মূল বিষয় নারীর ক্ষমতায়ন।’ তিনি জোর দিয়ে বলেন, জেন্ডার সমতা অর্জন ছাড়া ২০৩০-এর মধ্যে এসডিজি অর্জন করা সম্ভব হবে না।
অন্যদের মধ্যে এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপিএসের নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীর, ডিএসকের নির্বাহী পরিচালক ডা. দিবালোক সিংহ, পিএসটিসির নির্বাহী পরিচালক ড. নূর মোহাম্মদ, আরএইচ স্টেপ-এর নির্বাহী পরিচালক কাজী সুরাইয়া সুলতানা, বন্ধুর নির্বাহী পরিচালক সালেহ আহমদ এবং নারীপক্ষের হাবিবুন নেসা। তারা সকলে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন ও সমতা অর্জনের প্রয়াসের সঙ্গে একাত্ম প্রকাশ করেছেন। আয়োজনকারী অ্যালায়েন্স ও নেটওয়ার্কের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত সকলেই বিশ্ব হ্যাস টেগ মুভমেন্টের সঙ্গে সংহতি ব্যক্ত করেছে।
আদিবাসী দল মাদলের ঢোল-বাদনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয় এবং শেষে সংগীতশিল্পী সায়ান গান পরিবেশন করেন। বিশেষ আকর্ষণ ছিল সত্ত্বা নামক হিজড়া সম্প্রদায়ের দলীয় নৃত্য পরিবেশনা এবং কিশোর-কিশোরী ও যুবদের অংশগ্রহণে নারীর জীবনচক্র নিয়ে নাটিকা ‘চক্রভঙ্গ’। অনুষ্ঠানে আবৃত্তি করেন আফরোজা বেগম।