নৌকার এমপি নৌকার বিরুদ্ধে!
নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায় জমে উঠেছে উপজেলা নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা। এখানে ক্ষমতাসীন দলের দুই প্রার্থী অবতীর্ণ হয়েছেন অস্তিত্বের লড়াইয়ে। এঁদের একজন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুস সাদেক, অপরজন সহসাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান।
এই নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুস সাদেকের পক্ষে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে স্থানীয় আওয়ামী লীগের সাংসদ রাজিউদ্দিন আহম্মেদ রাজু সভা-সমাবেশ করছেন বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান। বৃহস্পতিবারও উপজেলার ডৌকারচরে সভা করেন সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহম্মেদ রাজু। এ ঘটনায় মিজানুর রহমান নির্বাচন কমিশন ও রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জানা যায়, কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক রায়পুরা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এবার আওয়ামী লীগ থেকে নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন পান বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান। কিন্তু স্থানীয় সাংসদ রাজু তাঁর ছেলের জন্য মনোনয়ন চেয়ে ব্যর্থ হয়ে তারই পছন্দের প্রার্থী সাদেক চেয়ারম্যানের জন্য জোর-তদবির করেন। মনোনয়ন না পেয়ে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অধীনস্থদের আনারস প্রতীকে নির্বাচন করার নির্দেশ দেন বলে জানান নৌকার প্রার্থী মিজানুর রহমানসহ একাধিক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী।
তাঁরা জানান, মিজান চেয়ারম্যানের সঙ্গে মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্বের কারণে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে প্রার্থী দিয়েছেন রাজিউদ্দিন রাজু। তাই স্বতন্ত্র থেকে আনারস প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুস সাদেক। তাঁর পক্ষে সাংসদ রাজিউদ্দিন রাজু সমস্ত শক্তি ও সমর্থক নিয়ে মাঠে রয়েছেন বলে সভা করে ঘোষণা দিচ্ছেন আনারসের প্রার্থী আবদুস সাদেক। সেই সঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাদেক এমপি রাজুর মনোনীত প্রার্থী হিসেবে বাড়ি বাড়ি ঘুড়ে আনারস মার্কায় ভোট চেয়ে বেড়াচ্ছেন। এ ছাড়া কেউ সাংসদের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গেলে তাদের নানা হয়রানি করাসহ দেখে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন বলেও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মিজানুর রহমান অভিযোগ করেন।
বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, রায়পুরা অডিটরিয়ামে কর্মী সমাবেশ ডেকে স্বতন্ত্র প্রার্থীর জন্য ভোট চেয়েছেন এমপি রাজু। আজ বৃহস্পতিবারও ডৌকারচরে সভা করেন তিনি। নৌকার এমপি হয়ে নৌকার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন তিনি। তা ছাড়া তিনি একের পর এক আচরণবিধি লঙ্ঘন করে যাচ্ছেন। এমপির কারণে সুষ্ঠু নির্বাচনে পরিবেশ নষ্ট হবে।
এ ব্যাপারে সাংসদ রাজিউদ্দিন আহম্মেদ রাজুর সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বললে তিনি বলেন, ‘আমি আমার ছেলের জন্য মনোনয়ন চেয়েছিলাম। সে মনোনয়ন না পাওয়ায় আমি এখন কারো পক্ষেই যাই না। আজ আমি ডৌকারচরে একটি স্কুলের ক্রীড়া অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। সেখানে কারো জন্যই ভোট চাইনি। এখন (সন্ধ্যায়) আমি ৭ মার্চ উপলক্ষে রায়পুরা অডিটরিয়ামে একটি মুক্তিযুদ্ধের নাটক দেখছি।’