সুলতান মনসুর ছলনাময়ী : রিজভী
একাদশ জাতীয় সংসদে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিজয়ী ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদকে ‘ছলনাময়ী’ বলেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
আজ বেলা ১১টায় জাতীয় সংসদের স্পিকারের কাছে শপথ নেন গণফোরাম থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য সুলতান মনসুর। তিনি মৌলভীবাজার-২ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন।
এর আধা ঘণ্টা পরে সুলতান মনসুরের শপথের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রিজভী আহমেদ বলেন, ‘রাজনীতিতে অঙ্গীকার ভঙ্গকারী, ছলনাময়ীরা গণশত্রুতে পরিণত হবে।’
আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা এসব কথা বলেন।
তবে গণফোরাম থেকে নির্বাচিত আরেক সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান ‘অনিবার্য কারণবশত’ আজ শপথ নেননি।
গতকাল বুধবার গণফোরামের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘গণফোরামের নির্বাচনী প্রতীক উদীয়মান সূর্য নিয়ে সিলেট-২ আসন থেকে নির্বাচিত মোকাব্বির খান অনিবার্য কারণবশত বৃহস্পতিবার শপথ নেবেন না।’
‘পরিবারের সদস্যরা খালেদা জিয়ার সাক্ষাৎ পাচ্ছেন না’
খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘গণতন্ত্রের জন্য অকুতোভয় আপসহীন সংগ্রামী, বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী, দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে বর্তমান ম্যান্ডেটবিহীন মিডনাইট ইলেকশনের সরকার। সুচিকিৎসার অভাবে তাঁর অসুস্থতা ভয়ংকর পর্যায়ে উপনীত হলেও তাঁকে ফেলে রাখা হয়েছে পরিত্যক্ত কারাগারে। এর ওপর প্রতিনিয়ত সরকারের মন্ত্রী ও আওয়ামী নেতারা সমস্ত শিষ্টাচার, সুরুচিকে অবজ্ঞা করে দেশনেত্রীর অসুস্থতা নিয়ে কটূক্তি ও ব্যঙ্গ করে যাচ্ছেন। এটি কেবল মনুষ্যত্বহীন বিবেকবর্জিত মানুষদের দ্বারাই সম্ভব।’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের দলের সিনিয়র নেতারা গত মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে দেশনেত্রীর পছন্দমতো বিশেষায়িত হাসপাতালে সুচিকিৎসার জন্য দ্রুত ভর্তি করার আহ্বান জানিয়েছেন। অত্যন্ত পরিতাপ নিয়ে বলছি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছিলেন, কারাবন্দি খালেদা জিয়াকে শিগগিরই বিএসএমএমইউ হাসপাতালে ভর্তি করে সুচিকৎসা করা হবে। তার আগের দিন নিম্ন আদালত হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী খালেদা জিয়াকে সুচিকিৎসা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তারপর তিন দিন চলে গেছে, কিন্তু কোনো উদ্যোগ নেই। আদালতের নির্দেশ ও মন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি এখনো কার্যকর হয়নি। আমরা আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রীকে নিয়ে প্রতিমুহূর্ত পার করছি উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা আর অজানা আশঙ্কায়।’
বিএনপির এ নেতা অভিযোগ করে বলেন, ‘এখানেই জিঘাংসার শেষ নয়, গত এক মাস ধরে দেশনেত্রীর সঙ্গে তাঁর আত্মীয়স্বজন ও পরিবারের সদস্যদের দেখা-সাক্ষাৎ বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। সর্বশেষ গত ১০ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার সঙ্গে তাঁর পরিবারের সদস্যদের সাক্ষাৎ করতে দেওয়া হয়। এরপর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি এবং গত ৩ মার্চ দুবার তাঁর আত্মীয়স্বজন এবং পরিবারের সদস্যরা সাক্ষাতের জন্য আবেদন করলেও অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। আমাদের দলের মহাসচিবসহ সিনিয়র নেতারা গত দুই মাসে বহু চেষ্টা করেও সাক্ষাতের অনুমতি পাচ্ছেন না।’
“কারাগার কর্তৃপক্ষ বারবার একই কথা বলছেন, ‘হাই লেভেল থেকে অনুমতি না পেলে আমাদের কিছু করার নেই।’ এই ‘হাই লেভেল’টা আমরা জানি। দেশের জনগণও ভালো করে জানেন,” যোগ করেন রিজভী।
সংবাদ সম্মেলনে দলের ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা নাজমুল হক নান্নু, শাহিদা রফিক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।