বারবার ফিনিক্স পাখির মতো জেগে ওঠে বিএনপি : ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বিএনপির শক্তি হচ্ছে সাধারণ মানুষ। আমরা বারবার লক্ষ করেছি যে, বিএনপিকে যতই ধ্বংস করে ফেলার চেষ্টা করা হয়, বিএনপি আবার সেই ফিনিক্স পাখির মতোই জেগে ওঠে।’
আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ১৩তম কারাবন্দি দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ছাত্র ফোরাম ও উত্তরাঞ্চল ছাত্র ফোরাম আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন বিএনপির মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, অত্যাচার-নির্যাতন করে বিএনপিকে দুর্বল করার চেষ্টা করছে সরকার। কিন্তু বিএনপির শক্তি সাধারণ জনগণ। তাই যতই চেষ্টা করা হোক, এ দলকে ধ্বংস করা যাবে না। জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতার কারণেই বিএনপি টিকে থাকবে।
বিএনপিকে ধ্বংসে সরকারদলীয় ষড়যন্ত্রের চিত্র তুলে ধরতে গিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘২৫ লক্ষের ওপরে (বিএনপি) নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। বিএনপির শক্তি কোথায়! বিএনপির শক্তি হচ্ছে সাধারণ মানুষের কাছে। আমরা বারবার লক্ষ করেছি যে, বিএনপিকে যতই ধ্বংস করে ফেলার চেষ্টা করা হয়, বিএনপি আবার সেই ফিনিক্স পাখির মতোই জেগে ওঠে।’
‘কারণ, এই রাজনীতিটা তো মানুষের অন্তরে গেঁথে আছে। এটা হচ্ছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের রাজনীতি। যতই অত্যাচার আসুক, নির্যাতন আসুক, নিপীড়ন আসুক। আমরা এই বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের যে রাজনীতি, সেই রাজনীতিকে ধারণ করে, এই পতাকাকে তুলে ধরে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাব। শুধু দলের প্রয়োজনে নয়, জাতির প্রয়োজনে আজকে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে,’ বলেন বিএনপির মহাসচিব।
দেশীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তারেক রহমান চক্রান্তের শিকার দাবি করে ফখরুল বলেন, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগই এখন পর্যন্ত প্রমাণ করা যায়নি।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আজকে দেশনেত্রী খালেদা জিয়া কারাগারে। আমাদের নেতা তারেক রহমান নির্বাসিত। এটার কারণ হচ্ছে, এই রাজনীতিকে যাঁরা ধারণ করেন, তাঁদের নিঃশেষ করে দেওয়া। আজকে আমাদের এমন কোনো নেতাকর্মী নেই, যার বিরুদ্ধে মামলা নেই, যাকে জেলে যেতে হয়নি। আজকে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত সমস্ত জায়গায় আমাদের নেতাকর্মীরা মামলায় জর্জরিত হয়েছে। এটার উদ্দেশ্য একটাই, এই রাজনীতি থেকে তাদের নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া।’
খালেদা জিয়ার অসুস্থতার কথা জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমি গতকাল জেলখানার কোর্টে গিয়েছিলাম খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে। তাঁর সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে। আমি সেই দৃশ্য বলে বোঝাতে পারব না। এই প্রথম তিনি বলেছেন, ‘আমি অসুস্থ। আমার (খালেদা জিয়া) অসুখে আমি অত্যন্ত কষ্ট পাচ্ছি।’”
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘খালেদা জিয়া আমাদের বলেছেন, তোমরা সংগ্রাম ডাকবে, তোমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে গণতন্ত্রের সংগ্রাম করতে হবে।’
মির্জা ফখরুল আরো বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন উত্তর কোরিয়ার মতো হয়ে গেছে। অর্থাৎ এখানে মানুষের কোনো স্বাধীনতা নেই। এই চক্র আমাদের ভাঙতে হবে। এই অন্ধকার থেকে আমাদের আলোর দিকে আসতে হবে। আসুন, আমাদের দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে এবং তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে শপথ নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাই।’
আসন্ন ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রদলের অংশগ্রহণের সিদ্ধান্তকে অভিনন্দিত করে এই নেতা বলেন, ‘আমরা খুব খুশি হয়েছি যে, ছাত্রদল ডাকসুতে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জয়-পরাজয় বড় কথা নয়। ছাত্রদলের অস্তিত্ব সেখানে প্রমাণ করার জন্য এটার খুব প্রয়োজন ছিল। এবং এটাকে কেন্দ্র করেই ছাত্রদল সামনের দিকে এগিয়ে যাবে।’
এ ছাড়া গ্যাসের দাম বাড়ানোর পরিকল্পনার সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, গ্যাসের দাম বাড়ানোর কথা হচ্ছে। জনগণ মনে করে, গ্যাসের দাম বাড়ানো যাবে না। দাম বাড়ালে জনগণ তা মেনে নেবে না। জনগণ তা প্রতিহত করবে।