সাত খুন : তারেক, নূর হোসেনের আপিল
নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের সাজার রায়ের বিরুদ্ধে র্যাব-১১-এর সাবেক অধিনায়ক তারেক সাঈদসহ প্রধান চার আসামি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন করেছেন।
সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আবেদন করা হয়। র্যাব-১১-এর তৎকালীন অধিনায়ক (বরখাস্ত) তারেক সাঈদ ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন মেজর (বরখাস্ত) আরিফ হোসেন, লেফটেন্যান্ট কমান্ডার চাকরিচ্যুত মাসুদ রানা (এম এম রানা) এবং নারায়ণগঞ্জের সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর নূর হোসেন।
তারেক সাঈদ, আরিফ হোসেন, মাসুদ রানা ও নূর হোসেনের পক্ষে আইনজীবী হিসেবে রয়েছেন অ্যাডভোকেট আবদুল বাসেত মজুমদার, মাহবুবুর রহমান, এস এম শাহজাহান ও এস এম লুৎফুর রহমান আকন্দ।
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট এস এম শাহজাহান জানান, আরিফ হোসেনের পক্ষে তিনি আপিল করেছেন। আপিলে আসামিরা ন্যায়বিচার চেয়েছেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত ২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি রায় ঘোষণা করেন। রায়ে ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও নয়জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এরপর ওই বছরের ২২ জানুয়ারি নিম্ন আদালত থেকে ডেথ রেফারেন্স তথা মৃত্যুদণ্ডের অনুমোদনের জন্য পূর্ণাঙ্গ রায়সহ যাবতীয় নথি পাঠানো হয় হাইকোর্টে।
পরে কারাবন্দি আসামিরা পর্যায়ক্রমে আপিল করেন। এ আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের ওপর শুনানি শেষে হাইকোর্ট গত বছরের ২২ আগস্ট রায় দেন। গত বছরের ১৯ নভেম্বর রায় প্রকাশিত হয়। রায়ে ১৫ জনকে নিম্ন আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। আর ১১ জনকে নিম্ন আদালতের মৃত্যুদণ্ডের সাজার পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এ ছাড়া নিম্ন আদালতে নয়জনকে দেওয়া বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ডের রায় বহাল রাখেন হাইকোর্ট। নিম্ন আদালত থেকে মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য পাঠানো ডেথ রেফারেন্স ও কারাবন্দি আসামিপক্ষে করা আপিলের ওপর শুনানি শেষে হাইকোর্টে এ মামলার রায় ঘোষণা করা হয়।
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের তখনকার কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, সিরাজুল ইসলাম লিটন, তাজুল ইসলাম, মনিরুজ্জামান স্বপন ও নজরুলের গাড়িচালক জাহাঙ্গীর এবং অ্যাডভোকেট চন্দন কুমার সরকার ও তাঁর গাড়িচালক ইব্রাহিমকে তুলে নিয়ে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি এবং আইনজীবী চন্দন কুমার সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা মডেল থানায় আলাদা দুটি হত্যা মামলা করেন। তদন্ত শেষে পুলিশ নূর হোসেন, তারেক সাঈদসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ৮ এপ্রিল আলাদা চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দেয়। তবে দুই মামলার অভিযোগপত্রেই আসামি অভিন্ন।