‘নেতৃত্ব নির্বাচনে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি হচ্ছে ভোট’
ভোটার তালিকাভুক্তকরণের সঙ্গে সঙ্গে ভোটারদের অধিকার ও দায়িত্ব সম্পর্কেও সচেতন করে তুলতে সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। তিনি বলেন, ‘নেতৃত্ব নির্বাচনে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি হচ্ছে ভোট।’
আজ শুক্রবার নির্বাচন কমিশনে ‘জাতীয় ভোটার দিবস’ উপলক্ষে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান। বার্তা সংস্থা ইউএনবি এ তথ্য দিয়েছে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘ভোটার তালিকাভুক্তকরণের সাথে সাথে ভোটারদের অধিকার ও দায়িত্ব সম্পর্কেও সচেতন করে তুলতে হবে। ভোটাররা যত বেশি সচেতন হবে নির্বাচনও ততো সুষ্ঠু হবে।’
উন্নয়নের জন্য দক্ষ ও যোগ্য নেতৃত্বের বিকল্প নেই উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘তাই তৃণমূল থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে যোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচিত করতে হবে। নেতৃত্ব নির্বাচনে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি হচ্ছে ভোট।’
আবদুল হামিদ আরও বলেন, ‘নির্বাচন অনুষ্ঠানের সাংবিধানিক দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের হলেও নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে হলে দলমত নির্বিশেষে সকলকেই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। মুখ্য ভূমিকা পালন করতে হবে ভোটারদের।’
জাতীয় ভোটার দিবস পালনের গুরুত্ব তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেন, ‘এ দিবসটিকে আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে তৃণমূল পর্যায়ে যথাযথভাবে পালন করা হলে দেশের গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিতে ইতিবাচক সাড়া পড়বে।’
দেশের সকল রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন এ লক্ষ্যে কার্যকর ভূমিকা রাখার আশাবাদ ব্যক্ত করে রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, ‘তাহলেই দেশে দোষারোপের রাজনীতির পরিবর্তে শান্তি, সৌহার্দ্য, সহমর্মিতা ও পরমত সহিষ্ণুতার রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে উঠবে।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় একজন ভোটার তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করে সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করেন এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় অংশগ্রহণ করেন। জাতীয় ভোটার দিবসের এ বছরের বিষয় নির্ধারণ করা হয়েছে ভোটার হব, ভোট দিব, যা অত্যন্ত সময়োপযোগী ও যথার্থ হয়েছে বলে আমি মনে করি।’
জনগণের শিক্ষার হার বৃদ্ধির সাথে সাথে ভোটার তালিকাভুক্ত হওয়ার হার ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘তারপরও দুর্গম হাওর, চরাঞ্চল এবং পাহাড়ী অঞ্চলের নাগরিকদের জন্য বিশেষ কার্যক্রম গ্রহণের জন্য আমি নির্বাচন কমিশনকে আহ্বান জানাচ্ছি।’
বাংলাদেশের প্রায় ১ কোটি মানুষ প্রবাসে অবস্থান করে জানিয়ে আবদুল হামিদ বলেন, ‘তারা বৈদেশিক মুদ্রা প্রেরণের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। কিন্তু এদের অনেকেরই জাতীয় পরিচয়পত্র নেই। প্রবাসে বসবাসরত বাংলাদেশিরা যাতে জাতীয় পরিচয়পত্র পেতে পারেন তার বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।’
এটা সম্ভব হলে প্রবাসীদের নাগরিকত্বসহ তাদের রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্তি সহজতর হবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘তাছাড়া প্রবাসীদের ভোটাধিকারের দাবিও ক্রমশ জোরালো হচ্ছে। প্রবাসে অবস্থান করে যুক্তরাষ্ট্র, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইনসহ পৃথিবীর প্রায় ১২০টি দেশের প্রবাসী নাগরিকরা ভোটাধিকার প্রয়োগ করছে।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘প্রবাসী বাংলাদেশিরাও যাতে জাতীয় পরিচয়পত্রসহ ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পায় সে বিষয়টিও সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করতে হবে।’