পুরান ঢাকায় অভিযান, বাসার নিচেই মিলছে কেমিক্যালের গুদাম
রাজধানীর পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় রাসায়নিক পর্দাথের কারখানা ও গুদামের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। প্রথম দিনের অভিযানে রাসায়নিকের বেশির ভাগ কারখানাই বন্ধ পাওয়া গেছে।
ছয়টি বাসার নিচের গোডাউনে মিলেছে বিপুল দাহ্য পদার্থ।
আবার কাউকে কাউকে রোববারের মধ্যে রাসায়নিক সরিয়ে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ রাসায়নিক কারখানা ও গুদামের গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। আগামী ১ মাস এই অভিযান চলবে বলে জানিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।
নিমতলী ট্র্যাজেডিখ্যাত ভয়াবহ আগুনে ১২৪ জনের প্রাণহানির ঘটনায় পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিকের কারখানা ও গুদাম উচ্ছেদে ১৭ দফা সুপারিশ করে তদন্ত কমিটি। ২০১০ সালের ৩ জুনের ওই ঘটনার পর কেটে গেছে আটটি বছর। এই দীর্ঘ সময়েও পুরান ঢাকা থেকে সরেনি রাসায়নিক। ফলে ২০ ফ্রেব্রুয়ারি দিবাগত রাতের আগুনে পোড়ে চকবাজারের চুড়িহাট্টা। ভয়াবহ আগুনে হতাহতের ঘটনায় টনক নড়ে সবার। এমই নির্মম প্রেক্ষাপটে ঘোষণা আসে রাসায়নিক কারখানা সরানোর। প্রথম দিনে ইসলামবাগ ও শহীদনগর এলাকায় আলাদা অভিযানে নামে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের দুটি টিম। আগুন লাগার সামান্য দুর্ঘটনাকে উসকে দিয়ে বড় ধরনের বির্পযয় ডেকে আনতে পারে এমন দাহ্য পদার্থের কারখানা ও গুদামে চলে অভিযান।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরীফ আহমেদ বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যেই ছয়টি বাসার নিচে গোডাউন চিহ্নিত করেছি। এখানে বিপুল দাহ্য পদার্থ আমরা দেখেছি। আমরা মালিকদের দুজনকে পেয়েছি। বাদবাকিদের পাইনি। আমরা তাদের মেসেজ দিয়েছি এই গোডাউন অনতিবিলম্বে সরাতে হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘জীবনে ঝুঁকি আছে এ অবস্থা থাকতে দিতে পারি না। যেকোনো মূল্যে আমরা সব গোডাউন ও কারখানা আবাসিক এলাকা থেকে স্থানান্তর করব।’
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপক এয়ার কমোডর জাহিদ হোসেন বলেন, ‘মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ বিপজ্জনক দাহ্য পদার্থ, যেগুলোতে আগুন লাগলে অনেক সময় ধরে জ্বলবে এবং অনেক উচ্চ তাপের সৃষ্টি করবে; বেজমেন্টে এটা অ্যালাউড না। এ ধরনের আমরা পেয়েছি। আমরা সিলগালা করে দিয়েছি।’
দাহ্য পদার্থ ব্যবহার করে পণ্য উৎপাদন ও গুদামজাত করার অনুমোদন না থাকায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি।
অভিযানের খবর পেয়ে বহু কারখানা বন্ধ করে দেন মালিকরা।