চকবাজারের অগ্নিকাণ্ডে একটি ট্রান্সফরমারও বিস্ফোরিত হয়নি!
পুরান ঢাকার চকবাজারের নন্দ কুমার রোডে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে একটিও বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার বিস্ফোরিত হয়নি। ওই রোডে অবস্থিত চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদ এলাকার আশপাশে বসবাসরত স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে এই তথ্য জানা গেছে। তাঁরা বলছেন, ঘটনাস্থলের আশপাশে মোট চারটি ট্রান্সফরমার আছে, যার চারটাই অক্ষত অবস্থায় আছে।
চুরিহাট্টা শাহী মসজিদের পাশের ভবনের মালিকের ছেলে ইসমাইল হোসেন। আজ শনিবার তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ঘটনাস্থলের আশপাশে চারটি ট্রান্সফরমার ছিল। এখনো সেই চারটিই আছে এবং অক্ষত অবস্থায় আছে। যে বা যারা বলছেন ট্রান্সফরমার বিস্ফোরিত হয়েছে তারা কেউ এখানকার বাসিন্দা না। তাই তাঁরা ভুল তথ্য দিচ্ছেন।
পুরান ঢাকার চকবাজারের নন্দ কুমার রোডে জামাল সরদার কমিউনিটি সেন্টার ও হোমিও দাতব্য চিকিৎসালয়ের সামনে অক্ষত আছে দুটি ট্রান্সফরমার। আজ শনিবার তোলা। ছবি : এনটিভি
স্থানীয়দের কথার সূত্র ধরে সরেজমিনে চারটি ট্রান্সফরমারই অক্ষত অবস্থায় পাওয়া গেছে।
চুরিহাট্টা শাহী মসজিদটি অবস্থিত নন্দ কুমার রোডে। ওই মসজিদের সামনেই গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১০টার পর ভয়াবহ আগুন লাগে। এতে মসজিদের পাশে হাজী ওয়াহেদ ম্যানশনসহ পাঁচটি ভবন পুড়ে যায়। নিহত হয় অন্তত ৬৭ জন। আহত হন অর্ধ শতাধিক।
আগুনে ওই মসজিদের তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। ক্ষতি হয়নি মসজিদের এক কোণায় থাকা বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমারেরও। ট্রান্সফরমারটি অক্ষত আছে।
মসজিদের একটু সামনে জামাল সরদার কমিউনিটি সেন্টার ও হোমিও দাতব্য চিকিৎসালয়। ওই দুটি ভবনের সামনে থাকা দুটি ট্রান্সফরমারও অক্ষত রয়েছে। এ ছাড়া নন্দ কুমার রোডের শেষে ওয়াটার ওয়াক্স রোড। সেখানেও একটি ট্রান্সফরমার আছে। সেটিও অক্ষত আছে।
পুরান ঢাকার চকবাজারের নন্দ কুমার রোডের শেষে ওয়াটার ওয়াক্স রোডের মুখের ট্রান্সফরমারও অক্ষত আছে। আজ শনিবার তোলা। ছবি : এনটিভি
নন্দ কুমার রোডের ১৪ নম্বর বাসার চতুর্থ তলার বাসিন্দা আলতাফ হোসেন। তিনি বলেন, এখানে মূলত আগুন লেগেছে সিলিন্ডার থেকে। ট্রান্সফরমারের কারণে আগুন লাগেনি। আগুন বাড়িয়েও দেয়নি ট্রান্সফরমার। কারণ এখানে ট্রান্সফরমারগুলো যে অবস্থায় ছিল সেই অবস্থাতে এখনো আছে।
এ ছাড়া ঘটনাস্থলের পাশাপাশি অবস্থিত কয়েকজন বাড়ির মালিকের সঙ্গে কথা হলে তাঁরাও ট্রান্সফরমার বিস্ফোরিত না হওয়ার কথা বলেন। এদের ভেতরে একটি বাড়ির মালিক মোসাব্বির রহমান বলেন, রাজমহল হোটেল ও আনাস হোটেলের জন্য গ্যাসভর্তি কয়েকটি সিলিন্ডার নিয়ে এসেছিল একটি পিকআপ। আগুন লাগার সময় পিকআপটি হোটেল দুটির সামনেই ছিল। তবে আগুন কিন্তু হোটেলের সামনে থাকা সিলিন্ডার থেকে প্রথমে লাগেনি। আগুন লেগেছিল রাস্তায় চলমান একটি পিকআপ থেকে।
মোসাব্বির রহমান আরো বলেন, একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ওই পিকআপে ধাক্কা দিলে তখন সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়ে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। তারপর পাশে থেকে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়। আগুন তখন আরো চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। তারপর ওয়াহেদ ম্যানশনে আগুন লাগে।
যদিও আগুন লাগা নিয়ে ভিন্নমত আছে। কেউ কেউ বলছেন, মূলত ওয়াহেদ ম্যানশন থেকেই আগুনের উৎপত্তি।