‘কেমিক্যাল গুদাম সরাতে সরকার আটঘাট বেঁধে নেমেছে’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, পুরান ঢাকার চকবাজারে অগ্নিকাণ্ডের পর আবাসিক এলাকা থেকে রাসায়নিক দ্রব্যের গুদাম সরিয়ে ফেলার ব্যাপারে সরকার আটঘাট বেঁধে নেমেছে।
আজ শনিবার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় অগ্নিকাণ্ডস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
এলাকাবাসী ও সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানান, এখন সরকারের প্রধান কাজ তিনটি। নিহতদের লাশ স্বজনদের কাছে তুলে দেওয়া, আহতদের সঠিক চিকিৎসার ব্যবস্থা ও নিখোঁজদের খুঁজে বের করা। এরপরই সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে পুরান ঢাকার ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা নিয়ে সরকার কাজ শুরু করবে।
সবাইকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ধৈর্য ধরতে হবে। এখন একটা ঘটনার পর এখানে যে অবস্থাটা বিরাজ করছে, সব কিছু গুছিয়েই ব্যবস্থা নিতে হবে এবং শুধু সাময়িক একটা ব্যবস্থা নিলেই এর কোনো সমাধান খুঁজে পাওয়া যাবে না। একটা সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে। এবং অবৈধ ও অনিরাপদ রাসায়নিক যে কাঠামো আছে, ঝুঁকিপূর্ণ এ কাঠামো এখান থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে। এ ব্যাপারে কোনো আপস নেই।’
গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে অগ্নিকাণ্ডের পর পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের দিক থেকে কোনো ধরনের গাফিলতি ছিল না উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘সমন্বয়ের যতটুকু অভাব ছিল সে ঘাটতিগুলো পূরণের জন্য সরকার আটঘাট বেঁধেই এবার নেমেছে। অতীতে ভুলত্রুটি থাকলে সেটা সংশোধন করেই এখানে নতুন করে যাত্রা শুরু করা হবে।’
ঠিক কী কারণে কীভাবে আগুন লেগেছে তাও খুঁজে বের করা হবে বলে জানান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অগ্নিকাণ্ডে আহতদের দেখতে আজ সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিট পরিদর্শন করেছেন। তিনি ঘটনার পর থেকে সবকিছু মনিটরিং করেছেন। প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সাপোর্ট দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন।
কাদের বলেন, এ ঘটনার পর সরকার সব ধরনের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর তিনটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। উদ্ধার কাজ পুরোপুরি সমাপ্ত হওয়ার পর প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কেমিক্যাল গোডাউন সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ পুরো পুরান ঢাকার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য কি না জানতে চালে সেতুমন্ত্রী বলেন, আপাতত এই চুড়িহাট্টা এলাকার সব কেমিক্যাল গুদাম সরানোর ব্যবস্থা করা হবে। এটি অত্যন্ত ঘিঞ্জি এলাকা। কেমিক্যাল গুদাম এসব এলাকায় রাখা নিরাপদ নয়। তবে ধীরে ধীরে এই নির্দেশ পুরো পুরান ঢাকায় বাস্তবায়ন করা হবে।
গাড়িতে সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহারের বিষয়ে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, গাড়িতে সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহারের বিকল্প কোনো ব্যবস্থা করা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখার জন্য সড়ক পরিবহন সচিব এবং বিআরটিএ চেয়ারম্যানকে দিয়ে একটি কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। তাঁরা দুই কর্মদিবসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন জমা দিলে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অগ্নিকাণ্ড নিয়ে শিল্পমন্ত্রীর করা মন্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, তিনি (শিল্পমন্ত্রী) কেমিক্যাল নয়, গ্যাস সিলিন্ডার থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়েছিল বলে জানিয়েছিলেন।
এ সময় স্থানীয় সংসদ সদস্য হাজি মোহাম্মদ সেলিম, আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদসহ অন্য দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে অগ্নিদুর্গত এলাকায় জরুরি সেবাগুলো পুনরায় নিয়মিত করার লক্ষ্যে এরই মাঝে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা কাজ শুরু করেছে।