শার্ট, ট্রাউজার দেখে আনোয়ারকে শনাক্ত করেন ভাই
পুরান ঢাকার চকবাজার অগ্নিকাণ্ডে অনেকের মরদেহ এমনভাবে পুড়ে গেছে যে শরীরের কোনো অংশ দেখে স্বজনদের শনাক্ত করারও উপায় নেই। ফলে বিলম্বিত হচ্ছে অনেকেরই লাশ হস্তান্তর প্রক্রিয়া। এখনো ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে পড়ে আছে অগ্নিদগ্ধ ২০ জনের লাশ।
আজ শনিবার সকালে ঢামেক হাসপাতাল মর্গ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কোনো রকমে নিখোঁজ এক ব্যক্তির লাশ শনাক্ত করেছেন তাঁর স্বজনরা।
স্বজনরা নিখোঁজ ব্যক্তির সন্ধানে মর্গে এলে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা তাঁদের পুড়ে যাওয়া মরদেহগুলো দেখান। সেখানে মরদেহের শরীরে লেগে থাকা শার্ট ও ট্রাউজারের কাপড়ের অংশ বিশেষ দেখে পরিবারের সদস্যরা একটি লাশ শনাক্ত করেন। তাঁর নাম আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। পরে মরদেহটি পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
নিহতের বড় ভাই শোকাতুর কণ্ঠে বলেন, ‘আমি আমার ছোটো ভাইয়ের সাথে তো সারাদিন ছিলাম। তাঁর পরনের ট্রাউজারটা ছিল, আর তাঁর ওই যে শার্ট, শার্ট তো বিভিন্ন রকমের, তাঁর শার্টটা আমার খুব পরিচিত। ওই শার্টের ইয়েটা দেখলাম আর কি, আইডেন্টিফাই করলাম।’
শনাক্তকরণ বিড়ম্বনার ফলে ঢামেক হাসপাতালের মর্গে এখনো পড়ে আছে চকবাজার অগ্নিকাণ্ডে নিহত ২০ জনের মরদেহ। ছবি : এনটিভি
এ নিয়ে এ পর্যন্ত ৪৭ জনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে ঢাকা জেলা প্রশাসন। বাকি ২০ মরদেহের মধ্যে ১৯ মরদেহের দাবিদাররা ডিএনএ পরীক্ষার জন্য ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্টের (সিআইডি) ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের কাছে নমুনা দিয়েছেন।
কবে নাগাদ ডিএনএ পরীক্ষা শেষে বাদবাকি মরদেহ হস্তান্তর করা যেতে পারে, জানতে চাইলে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (ফরেনসিক) রুমানা আক্তার বলেন, ‘নমুনার ওপরে বেইজ করেই আসলে আমাদের সময়টা লাগে। কিছু কিছু নমুনার ক্ষেত্রে খুব দ্রুত করা যায়, কিছু কিছু নমুনার ক্ষেত্রে সময় লাগে। এ ক্ষেত্রে দুই থেকে তিন সপ্তাহও লাগে। কাজেই একেবারে স্পেসিফিক কোনো সময় আমি বলে দিতে পারব না।’
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী খুব শিগগিরই আবাসিক এলাকা থেকে জেলা প্রশাসন কেমিক্যাল গোডাউন সরানোর অভিযান শুরু করবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
এ ব্যাপারে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার কে এম আলী আজম বলেন, ‘আমাদের প্রতিবেদন প্রাপ্তির পরই দ্রুততম সময়ের মধ্যে ইনশা আল্লাহ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’