ওয়াহেদ ম্যানশনে এখনো প্রচুর রাসায়নিক পদার্থের মজুদ
ওয়াহেদ ম্যানশনে এখনো শতাধিক কনটেইনার রাসায়নিক পদার্থ মজুদ আছে। শুধু কনটেইনার নয়, শতাধিক ব্যাগভর্তি রাসায়নিক পদার্থ ও প্লাস্টিকের পণ্য তৈরির দানাও রয়েছে। যেগুলোর ন্যূনতম বিস্ফোরণে ওয়াহেদ ম্যানশনের মতো কয়েকটি ভবন উড়ে যেতে পারে।
গত বুধবার রাতে পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় ওয়াহেদ ম্যানশন।
অগ্নিকাণ্ডে ৬৭ জন নিহতের ঘটনায় ‘ওয়াহেদ ম্যানশন’ ভবনে রাসায়নিক পদার্থ থাকার কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়েছে বলে জানিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) তদন্ত কমিটি।
ওয়াহেদ ম্যানশনে শুক্রবার সকালে গিয়ে দেখা যায়, ভবনটির নিচতলা থেকে শুরু করে প্রতিটি ফ্লোরই আগুনে পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিন্তু নিচতলার একটি গোডাউনে এখনো প্রচুর পরিমাণে রাসায়নিক পদার্থ অক্ষত অবস্থায় মজুদ রয়ে গেছে।
শুধু ওয়াহেদ ম্যানশন নয়, এর আশপাশের ভবনগুলোতেও এভাবে রাসায়নিক পদার্থের মজুদ ও ব্যবসা করা হতো। মূলত যে কয়টি ভবন আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এসব ভবনের সবকটির নিচে রয়েছে প্লাস্টিকের দানা, বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থের দোকান বা গোডাউন।
ওয়াহেদ ম্যানশনের সামনের বিল্ডিংয়ের নিচতলায় থাকা একটি টেইলার্সের দর্জি শামসুল ইসলামের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘ওই দিন আমরা একটু আগেই দোকান বন্ধ করে চলে যাই। কারণ ২১ ফেব্রুয়ারি, কাস্টমারও তেমন আসবেন না। দোকান বন্ধ করে আগে চলে যাওয়ায় আমরা রক্ষা পাই।’
পাশের কয়েকটি দোকান দেখিয়ে দিয়ে শামসুল বলেন, ‘এগুলোতে প্লাস্টিকের দানা ও বিভিন্ন কেমিক্যাল বিক্রি হতো। এসব দোকানি প্রায় ৩০-৩৫ বছর এই এলাকায় ব্যবসা করে যাচ্ছেন।’
আজ সকালে চকবাজারের চুড়িহাট্টায় হাজী ওয়াহেদ ম্যানশন পরিদর্শন শেষে এক ব্রিফিংয়ে তদন্ত কমিটির সদস্য ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (প্রশিক্ষণ, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) লে. কর্নেল এস এম জুলফিকার রহমান বলেন, ‘হাজী ওয়াহেদ ম্যানশন’ ভবনে নিশ্চিতভাবেই রাসায়নিক পদার্থ ছিল। সেইসঙ্গে ওই ভবনে কোনো ধরনের অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা ছিল না।
বার্তা সংস্থা ইউএনবি জানিয়েছে, এক প্রশ্নের জবাবে জুলফিকার রহমান বলেন, ‘এই ভবনে যে পাউডার পাওয়া গেছে, সেগুলো রাসায়নিক পদার্থ ছিল। এখানে যেসব প্লাস্টিকের বোতল পাওয়া গেছে, সেগুলোও রাসায়নিক পদার্থে ভর্তি ছিল। যিনি বলেছেন এখানে কোনো রাসায়নিক ছিল না, সে কথাটি সত্য নয়।’