জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের গণশুনানি ২২ ফেব্রুয়ারি

Looks like you've blocked notifications!
আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর মতিঝিলে ড. কামাল হোসেনের চেম্বারে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ছবি : এনটিভি

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে গণশুনানি কর্মসূচির তারিখ ২৪ ফেব্রুয়ারির পরিবর্তে ২২ ফেব্রুয়ারি নির্ধারণ করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর মতিঝিলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেনের চেম্বারে ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকে গণশুনানির তারিখ পরিবর্তনের এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এর আগে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য ও জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব জানিয়েছিলেন, ভোটের অনিয়ম নিয়ে ২৪ ফেব্রুয়ারি গণশুনানির আয়োজন করবে ঐক্যফ্রন্ট। সেখানে ‘ভোট ডাকাতি’র সঙ্গে জড়িতদের আমন্ত্রণ জানানো হবে না।

আজ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বৈঠক শেষে ড. কামাল হোসেন বলেন, আমাদের গণশুনানি ছিল ২৪ ফেব্রুয়ারি। এটি আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার হবে। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির মিলনায়তনে এই গণশুনানি সকাল ১০টায় শুরু হবে এবং বিকেল ৪-৫টা পর্যন্ত চলবে। ওই দিন ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট ডাকাতি কারচুপি ও অনিয়মের অভিযোগ প্রার্থী ও ভুক্তভোগীরা দেশবাসীর সামনে প্রকাশ করবেন।

গণশুনানিতে জামায়াতে ইসলামীকে আমন্ত্রণ জানানো হবে না বলেও জানান ড. কামাল হোসেন। এ সময় সম্প্রতি জামায়াত নেতা ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাকের পদত্যাগ ও জায়ামাতকে ক্ষমা চাওয়ার পরামর্শকে স্বাগত জানান তিনি।

গণশুনানি দুদিন এগিয়ে আনার কারণ জানতে চাইলে গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেন, কোথাও জায়গা পাওয়া যাচ্ছিল না। যেহেতু আমরা আইনজীবী সমিতির মিলনায়তনটি পেয়েছি ২২ তারিখ। সেজন্য গণশুনানির তারিখ এগিয়ে আনা হয়েছে।

এই গণশুনানি থেকে ঐক্যফ্রন্ট কী অর্জন করবে জানতে চাইলে ঐক্যফ্রন্টের এই নেতা বলেন, সংবিধানে লেখা আছে, জনগণ ক্ষমতার মালিক। সেদিন জনগণ জানতে পারবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কী ঘটেছিল, তার বাস্তব অভিজ্ঞতা প্রার্থীরা তুলে ধরবেন।

নিবন্ধন বাতিল হওয়া সংগঠন জামায়াতে ইসলামীর ২২ জন প্রার্থী ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছে তাদের এই গণশুনানিতে আমন্ত্রণ জানানো হবে কি না- এ রকম প্রশ্ন ড. কামাল হোসেনের প্রতি রাখলে তিনি বলেন, এগুলো আমার জানা নেই।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর মতিঝিলে নিজের চেম্বারে ড. কামাল হোসেন। ছবি : এনটিভি

তবে এ বিষয়ে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসিন মন্টু বলেন, নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্টে জামায়াত ছিল না।

এ সময়ে গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী বলেন, আপনারা তো উদ্দেশ্যমূলক প্রশ্ন করেন। বলা হলো তো জামায়াতে ইসলামী ছিল না।

গণশুনানিতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক দল বিএনপি, জেএসডি, গণফোরাম, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, নাগরিক ঐক্য ছাড়াও বাম ও গণতান্ত্রিক যেসব দল নির্বাচনে অংশ নিয়েছে তাদের আমন্ত্রণ জানানো হবে বলে জানান জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব।

আ স ম আবদুর রব বলেন, ‘স্যার (ড. কামাল হোসেন) যেটা বলেছেন, ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে সব প্রার্থী, প্লাস বাইরে বাম ঐক্যজোটসহ প্রগতিশীল দলের যারা অংশগ্রহণ করেছেন তাদের দাওয়াত দেওয়া হয়েছে। ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে যদি অন্য কোনো দল থাকে, ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে যেসব দল আছে তাদের এবং বাম গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল যেসব দল আছে তাদের আমন্ত্রণ জানানো হবে।’

সরকারবিরোধী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ হাত পাখা নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল, তাদের গণশুনানিতে আমন্ত্রণ জানানো হবে কি না, প্রশ্ন করা হলে আবদুর রব বলেন, এটা বিবেচনা করে দেখা হবে।

এর আগে আজ মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টায় থেকে দেড় ঘণ্টাব্যাপী মতিঝিলে ড. কামাল হোসেনের চেম্বারে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী, মোস্তফা মোহসিন মন্টু ও জগলুল হায়দার আফ্রিক, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের হাবিবুর রহমান তালুকদার খোকা, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, শহিদুল্লাহ কায়সার, বিকল্পধারা বাংলাদেশের একাংশের অধ্যাপক নুরুল আমিন ব্যাপারী, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।