নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেছেন, গণ্ডগোল এড়াতে আগে থেকেই কাউন্সিলদের মুভমেন্টগুলো ফলো করা হবে। যদি সেরকম কোনো পরিস্থিতি দেখা যায় তাহলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আইনগতভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

আজ সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন ভবনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সভা শেষে মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ইসি সচিব।

হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, আসন্ন ঢাকা সিটি উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে উপনির্বাচন ও নতুন ১৮টি ওয়ার্ডে সাধারণ নির্বাচন এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সঙ্গে যুক্ত হওয়া নতুন ১৮টি ওয়ার্ডে সাধারণ নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থীরা যাতে কোনো প্রকার গণ্ডগোল করতে না পারে সে জন্য আগে থেকেই কাউন্সিলরদের মুভমেন্টগুলো ফলো করা হবে।

ইসি সচিব বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে আমাদের বলা হয়েছে যে, তারা কড়া নজরদারিতে রাখবেন। বিশেষ করে কাউন্সিলর প্রার্থী যারা আছেন, তারা যাতে কোনো প্রকার গণ্ডগোল বা অন্যকোনো বিষয়ে চিন্তা না করতে পারেন। আগেই তাদের মুভমেন্টগুলো ফলো করা হবে। যদি সে রকম কোনো কিছু দেখে, তাহলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আইনগতভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, আসন্ন ঢাকা সিটি করপোরেশন নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করা হয়েছে। নির্বাচন আচরণ বিধিমালা প্রতিপালন এবং নির্বাচনের পূর্বে, নির্বাচনের দিন এবং নির্বাচনের পরবর্তীকালে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রতি সাধারণ ভোটকেন্দ্রে সর্বোচ্চ ২২ এবং গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ২৪ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত থাকবেন। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে পুলিশের মোবাইল টিম থাকবে ২৭টি, স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে ১৮টি, র‍্যাবের মোবাইল টিম থাকবে ২৮টি এবং বিজিবির মোবাইল টিম থাকবে ২৭টি। দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে পুলিশের মোবাইল ফোর্স থাকবে ৯টি, স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে ৬টি, র‍্যাবের মোবাইল টিম থাকবে ৯ টি এবং বিজিবির মোবাইল টিম থাকবে ৯টি। এ ছাড়া র‍্যাব ও বিজিবি আলাদাভাবে কিছু মোবাইল টিম ওয়েটিংয়ে রাখবে। প্রয়োজন হলে যাতে তারা মুভ করতে পারে।

প্রয়োজনীয় সংখ্যক ম্যাজিস্ট্রেট, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও যারা নির্বাচনের সময় মোতায়েন থাকবেন ওনারা যাতে কোথাও আইনশৃঙ্খলা ব্যাহত না হয় এবং ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন, তার জন্য সব ধরনের আয়োজন রাখবেন এবং পরিবেশ যাতে বিঘ্নিত না হয়, সেটার দিকেও উনারা খেয়াল রাখবেন।

এ ব্যাপারে মাননীয় নির্বাচন কমিশনারগণ তাদের নির্বাচনের পরিবেশ সঠিক রাখার জন্য এবং ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন, তার পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর যারা প্রধানগণ আছেন, তারা নিশ্চিত করেছেন এবং নির্বাচন কমিশনকে আশ্বস্ত করেছেন এমন কোনো পরিবেশ সৃষ্টি হবে না যার কারণে ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে যেতে না পারেন। সেজন্য কোনো আশঙ্কা নেই। ভোটের পরিস্থিতি এখন পর্যন্ত স্বাভাবিক আছে। ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারবেন, যোগ করেন ইসি সচিব।

হেলালুদ্দীন আহমদ জানান, গোয়েন্দা বাহিনীর পক্ষ থেকেও আমাদেরকে বলেছেন যে, ভোট বিঘ্নিত হতে পারে এমন কোনো থ্রেট বা এই ধরনের কোনো আশঙ্কা উনারা এখন পর্যন্ত পাননি।

সচিব বলেন, যেহেতু এটা স্থানীয় সরকার নির্বাচন, বিগত আমাদের জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এবং এটা যেহেতু একটা মেগা সিটি এবং বিভিন্ন অঞ্চলের ভোটাররা এখানে বিভিন্ন জায়গায় বসবাস করে। তারা যাতে গিয়ে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে। সে ব্যাপারে কমিশনাররা দিক নির্দেশনা দিয়েছেন।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার সভাপতিত্বে সভায় কমিশনার মাহবুব তালুকদার, মো. রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, পুলিশের মহাপরিদর্শক, র‍্যাবের মহাপরিচালক, ডিএমপি কমিশনার, বিজিবি প্রতিনিধি, ডিজিএফআইয়ের পরিচালকসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধি, স্থানীয় সরকার,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিবসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।