বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব কাল, প্রস্তুতি শুরু
আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শেষ হয়েছে আজ শনিবার। আজই মধ্যরাতের মধ্যে মাওলানা জোবায়েরের অনুসারীদের ইজতেমা ময়দান ত্যাগ করবেন বলে জানিয়েছেন গাজীপুর মহানগর পুলিশের কমিশনার ওয়াই এম বেলালুর রহমান।
শনিবার আখেরি মোনাজাতের পর থেকে রাত ১২টার মধ্যে পুরো মাঠ খালি করে পুলিশ মাঠের নিয়ন্ত্রণ নেবে। এরই মধ্যে জোবায়ের অনুসারীদের মাঠ ত্যাগ করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
আগামীকাল রোববার সকাল সাতটার পর মাওলানা সাদ অনুসারীরা মাঠে প্রবেশ করবেন বলে জানিয়েছেন কমিশনার। আজ শনিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে ইজতেমা মাঠে নির্মিত পুলিশ কন্ট্রোল রুমে এসব কথা বলেন কমিশনার। মুসল্লিদের প্রস্থান এবং প্রবেশ নিয়ে যাতে কোন রকমের বিশৃঙ্খলা না হয় সেদিকে পুলিশের সতর্ক অবস্থান রয়েছে।
বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে প্রশাসনের নেওয়া সকল কার্যক্রম আগের মতোই থাকছে। বিশেষ করে নিরাপত্তার বিষয়ে পুলিশ প্রশাসনের গ্রহন করা ব্যবস্থা অব্যাহত থাকছে। গাজীপুর মহানগর পুলিশের কমিশনার ওয়াই এম বেলালুর রহমান জানান, বিশ্ব ইজতেমার সার্বিক পরিস্থিতি সন্তোষজনক রাখতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা আগের মতোই সজাগ রয়েছে। টঙ্গীতে নিরাপত্তা বাহিনীর প্রায় ১৫ হাজার সদস্য মোতায়েন করা হয়, যা দ্বিতীয় পর্বেও থাকবে। ইজতেমা ময়দানসহ পুরো টঙ্গীতে কড়া নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা অব্যাহত রয়েছে।
মাঠে প্রবেশ করলেন মাওলানা সাদের অনুসারীরা
বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মোনাজাত শেষে মাওলানা জোবায়ের অনুসারী মুসল্লিদের ময়দান ত্যাগ করার পর বিকেলে সাদ অনুসারি শীর্ষ মুরুব্বীরা ময়দানে প্রবেশ করেন। নজমে জামাতের মুরুব্বিরা সেখানে মঞ্চ তৈরীসহ আনুষাঙ্গিক বিষয় তদারকি করবেন। মাওলানা সাদ অনুসারী মাওলানা সৈয়দ আনিসুজ্জামান জানান, রোববার ভোরে ইজতেমার মুসল্লিরা ময়দানে আসতে শুরু করবেন। প্রশাসনের লোকজন সকালের মধ্যে ময়দান তাদের কাছে বুঝিয়ে দেবেন। তারপর এজতেমার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে।
ইজতেমা মাঠে আরো তিন মুসল্লির মৃত্যু
বিশ্ব ইজতেমায় আগত আরো দুই মুসল্লি মারা যান। শনিবার ভোরে ঢাকার কদমতলা এলাকার মো. আবুল হোসেন (৫৫) ইজতেমা ময়দানে তাঁর নিজ খিত্তায় ভোর পাঁচটার দিকে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। আখেরি মোনাজাত শেষে বাড়ি ফেরার পথে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে এক মুসল্লি মারা যান। তাঁর নাম আব্দুল আউয়াল (৫৬)। তিনি রাজবাড়ি জেলার বালিয়াকান্দি থানার রুলজানী গ্রামের বাসিন্দা। তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এর আগে শুক্রবার দুপুরে আব্দুর রহমান (৫৫) নামে আরো এক মুসল্লি মারা যান। তিনি সিরাজগঞ্জের বেলকুচি থানার বাসিন্দা। ইজতেমা মাঠে জানাজা শেষে তাঁদের লাশ গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এ নিয়ে ইজতেমায় অংশগ্রহনকারী সাতজন মুসল্লি শনিবার বিকেল পর্যন্ত মারা গেলেন। ইজতেমা মাঠের লাশের জিম্মাদার আদম আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ময়দান পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সহকারী প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা আরিফুর রহমান জানান, প্রথম পর্বের এজতেমা শেষ হওয়ার পর শনিবার বিকেল থেকেই পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা দায়িত্ব পালনে নিয়োজিত হয়েছেন। ৫০টি ট্রাকের মাধ্যমে রাতের মধ্যেই ময়দান পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করে আবর্জনা অপসারণ করা হবে। যেহেতু রোববার ফজর নামাজের পর থেকে দ্বিতীয় পর্ব শুরু হবে,তাই ইজতেমা ময়দান, আশপাশ, টয়লেট,ওজু-গোসলখানা সহ সবকিছুই পরিস্কার করতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। টয়লেটসহ অন্যান্য স্থানে পর্যাপ্ত পরিমান ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে দেওয়া হয়েছে।