অবসরের পর গ্রামে থাকতে চান প্রধানমন্ত্রী

Looks like you've blocked notifications!
নিজ গ্রামে গেলে স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৭ সালের ২৭ জানুয়ারি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় নিজ গ্রামে রিকশাভ্যানে চড়েন তিনি। এ সময় ভ্যানে ছিলেন তাঁর বোন শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, ববির স্ত্রী পেপি সিদ্দিক, তাঁদের মেয়ে লিলা তুলি সিদ্দিক ও ছেলে কায়াস মুজিব সিদ্দিক। ছবিটি তখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সাড়া ফেলে। ছবি : ফোকাস বাংলা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ার পর তিনি তাঁর গ্রামে বাস করবেন। তিনি বলেন, ‘যখনই আমি রাজনীতি থেকে অবসর নেব, আমি আমার গ্রামে চলে যাব এবং এটিই আমার সিদ্ধান্ত।’

আজ মঙ্গলবার সকালে গাজীপুরে বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি একাডেমিতে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পর প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন।

বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর (ভিডিপি) ৩৯তম জাতীয় সমাবেশ উপলক্ষে আনসার ও ভিডিপির শিল্পীরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তাদের শিল্পশৈলী প্রদর্শন করেন।

আনসার ও ভিডিপি লেকে আনসার সদস্যদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নৌকায় উঠে দুই শিশুর নৃত্য দেখে প্রধানমন্ত্রী আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, নৌকায় এই দৃশ্য দেখে তাঁর কিশোর বেলার স্মৃতি স্মরণে আসছে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনা তাঁর স্মৃতি স্মরণ করে বলেন, ‘আমার পিতামহের একটি বিরাট পানসি নৌকা ছিল, এটিতে দুইটি কক্ষ ও জানালা ছিল। আমি যখন এটিতে উঠতাম, জানালার কাছে বসে আমার হাত দিয়ে পানি স্পর্শ করতাম।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘নৌকায় অন্যরাও থাকতো, বিশেষ করে আমার ভাই (শেখ) কামাল, সে নৌকার ছাদ থেকে লাফ দিত এবং নৃত্য করতো। যখন আমি নৌকা দেখি, আমার কিশোরী বেলার স্মৃতি স্মরণে আসে।’

প্রতিটি গ্রামকে শহরে পরিণত করার তাঁর সরকারের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের লক্ষ্য হলো গ্রামের লোকদের কাছে শহরের সব সুযোগ সুবিধা পৌঁছে দেওয়া, যাতে তারা উন্নত জীবন পায় এবং সুন্দরভাবে বসবাস করতে পারে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা আজকের শিশুদের আরো উজ্জ্বল এবং সুন্দর ভবিষ্যৎ চাই, পাশাপাশি তারা প্রযুক্তিভিত্তিক হয়ে উঠুক। আরো উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ নির্মাণে তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু দেশ স্বাধীন করেছেন, তাঁর লক্ষ্য ছিল ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা গড়ে তোলা। আমাদের অঙ্গীকার এই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা। আমরা ক্ষুধা দূর করেছি এবং উল্লেখযোগ্য হারে দারিদ্র্য কমিয়ে এনেছি। দারিদ্র্য হার আরো কমিয়ে আনব, বাংলাদেশ আরো উন্নত ও সমৃদ্ধ হবে, এজন্য সবার সহযোগিতা চাই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আনসার ও ভিডিপি সদস্যরা প্রতিটি গ্রামে পরিবর্তন আনবে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি সুন্দর দেশ এবং আমাদের মাতৃভূমি গঠনে আমাদের সবাইকে এমনভাবে কাজ করতে হবে যাতে আমাদের মাথা সমুন্নত রাখতে পারি, আমাদের অন্যের কাছে হাত পাততে না হয়। আমরা নিজস্ব সম্পদে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করব।’

মন্ত্রীবৃন্দ, জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাবৃন্দ, সংসদ সদস্যগণ, তিন বাহিনী প্রধানগণ, কূটনীতিকবৃন্দ এবং ঊর্ধ্বতন বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।