এনটিভির সাংবাদিক মাকসুদসহ ১৯ জন পেলেন ‘পোলট্রি মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড’

Looks like you've blocked notifications!
অতিথির কাছ থেকে পোলট্রি মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড-২০১৮-এর পুরস্কার নেন এনটিভির সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট মো. মাকসুদুল হাসান। ছবি : সংগৃহীত

এনটিভির সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট মো. মাকসুদুল হাসানসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ১৯ জন সাংবাদিক পেয়েছেন পোলট্রি মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড-২০১৮। বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি) তৃতীয়বারের মতো এ পুরস্কার দিল।

সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে সাংবাদিকদের হাতে এ পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। পাঁচটি নিয়মিত ক্যাটাগরিতে মোট নয়জনকে এবং আরো দশজন প্রতিবেদককে রাইজিং পোলট্রি রিপোর্টার্স পুরস্কার দেওয়া হয়।

দৈনিক সংবাদপত্র ক্যাটাগরিতে প্রথম পুরস্কার পান দৈনিক জনকণ্ঠের স্টাফ রিপোর্টার রহিম শেখ। দ্বিতীয় হন দৈনিক ভোরের কাগজের সিনিয়র রিপোর্টার মরিয়ম মনি সেঁজুতি এবং তৃতীয় হন দি নিউজ টুডের স্টাফ রিপোর্টার মো. মাজহারুল ইসলাম (মিচেল)।

‘ঢাকার বাইরে থেকে প্রকাশিত সংবাদপত্রের প্রতিবেদন’ ক্যাটাগরিতে একমাত্র পুরস্কার লাভ করেন রাজশাহী থেকে প্রকাশিত দৈনিক নতুন প্রভাতের বার্তা সম্পাদক সোহেল মাহবুব।

টিভি ও রেডিও ক্যাটাগরিতে প্রথম পুরস্কার পেয়েছেন যমুনা টেলিভিশনের স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট সুশান্ত সিনহা। দ্বিতীয় হন এনটিভির সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট মো. মাকসুদুল হাসান এবং তৃতীয় হন চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের কৃষিবিষয়ক প্রতিবেদক ফয়জুল সিদ্দিকী।

বার্তা সংস্থা/ অনলাইন ক্যাটাগরিতে একমাত্র পুরস্কার পান জাগোনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের স্টাফ রিপোর্টার মো. আবদুল্লাহ আল মামুন।

পোলট্রি ও কৃষিবিষয়ক ম্যাগাজিন/ অনলাইন ক্যাটাগরিতে একমাত্র পুরস্কার লাভ করেন এগ্রিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সম্পাদক মো. খোরশেদ আলম (জুয়েল)।

অতিথির কাছ থেকে পোলট্রি মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড-২০১৮-এর পুরস্কার নেন এক সাংবাদিক। ছবি : সংগৃহীত

এ ছাড়া রাইজিং পোলট্রি রিপোর্টার্স পুরস্কার পান টেলিভিশন চ্যানেলের পাঁচজন ও জাতীয় দৈনিকের পাঁচজন সাংবাদিক। তাঁরা হলেন—চ্যানেল আইয়ের রংপুর প্রতিনিধি মেরিনা লাভলী, একাত্তর টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার মো. মেহেদী হাসান (ডলার), ডিবিসি নিউজের স্টাফ রিপোর্টার ইব্রাহিম পাঠান, মোহনা টিভির স্টাফ রিপোর্টার তানজিলা নিঝুম, মাই টিভির সিনিয়র রিপোর্টার সি এম আমিনুল মজলিশ, দৈনিক কালের কণ্ঠের স্টাফ রিপোর্টার মো. শওকত আলী, দৈনিক যুগান্তরের সিনিয়র রিপোর্টার হামিদুর রহমান ভূঁইয়া (শিপন হাবীব), দৈনিক সমকালের স্টাফ রিপোর্টার শামসুল হক মোহাম্মদ মিরাজ (মিরাজ শামস), দৈনিক নয়া দিগন্তের সিনিয়র রিপোর্টার জিয়াউল হক মিজান এবং দি ইনডিপেন্ডেন্টের বিজনেস রিপোর্টার শরীফ আহমেদ।

প্রথম পুরস্কার বিজয়ীকে ৫০ হাজার টাকা, দ্বিতীয় বিজয়ীকে ৪০ হাজার টাকা ও তৃতীয় বিজয়ীকে ৩০ হাজার টাকার চেক দেওয়া হয়। তা ছাড়া ঢাকার বাইরের দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদ, সংবাদ সংস্থা/ অনলাইন এবং পোলট্রি ও কৃষি ম্যাগাজিন/ অনলাইনের পুরস্কার বিজয়ীদের প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা এবং প্রত্যেক বিজয়ীকে ক্রেস্ট ও সনদ দেওয়া হয়। ‘রাইজিং পোলট্রি রিপোর্টার্স’ পুরস্কার বিজয়ীদের প্রত্যেকে ১০ হাজার টাকা এবং সনদ পান।

পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন একুশে টেলিভিশনের এডিটর-ইন-চিফ মনজুরুল আহসান বুলবুল, দৈনিক প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম মুকুল, যমুনা টেলিভিশনের বিজনেস এডিটর সাজ্জাদ আলম খান তপু, ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের (ফিআব) সভাপতি এহতেশাম বি. শাহজাহান ও ওয়ার্ল্ডস পোলট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ শাখার (ওয়াপসা-বিবি) সভাপতি শামসুল আরেফিন খালেদ। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. হীরেশ রঞ্জন ভৌমিক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিলের (বিপিআইসিসি) সভাপতি মসিউর রহমান।

জুরি বোর্ডের পর্যবেক্ষণে মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, দেশের বিশাল জনগোষ্ঠী পোলট্রি শিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই পোলট্রি শিল্পের বিষয়ে গণমাধ্যমের আগ্রহ থাকাটা স্বাভাবিক। রিপোর্টিংয়ের জন্য পোলট্রি একটি বিশেষায়িত শাখা হতে পারে।

অতিথির সঙ্গে পোলট্রি মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড-২০১৮-এর পুরস্কার পাওয়া সাংবাদিকরা। ছবি : সংগৃহীত

আব্দুল কাইয়ুম মুকুল বলেন, বিগত কয়েক বছরে গণমাধ্যমে পোলট্রিবিষয়ক রিপোর্টের সংখ্যা বেড়েছে, একই সঙ্গে বেড়েছে এ বিষয়ক প্রতিবেদনের মান। তবে নারী সাংবাদিকদের অংশগ্রহণ বেশ কম।

সাজ্জাদ আলম খান তপু বলেন, পোলট্রি শিল্পের বিস্তার মূলত গ্রামীণ এলাকাগুলোতে। তাই ঢাকার বাইরে কর্মরত সংবাদকর্মীদের পোলট্রি রিপোর্টিং বিষয়ে প্রশিক্ষণ আয়োজন করা প্রয়োজন।

মসিউর রহমান বলেন, বিপিআইসিসির মিডিয়া মনিটরিং রিপোর্ট অনুযায়ী গত এক বছরে জাতীয় দৈনিক, টিভি চ্যানেল ও অনলাইনে এক হাজারের বেশি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। পোলট্রি ইস্যুতে অনেকগুলো টিভি টক শো হয়েছে। ঢাকার বাইরে থেকে প্রকাশিত সংবাদপত্রগুলোতেও পোলট্রিবিষয়ক রিপোর্ট ও  আর্টিকেল প্রকাশিত হয়েছে।

শামসুল আরেফিন খালেদ বলেন, পোলট্রি এখন আপামর মানুষের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। উচ্চবিত্ত থেকে শুরু করে নিম্ন-আয়ের মানুষ, সবারই খাদ্য ও পুষ্টি চাহিদা পূরণ করছে ডিম ও মুরগির মাংস। ফ্রায়েড চিকেন, নাগেট, সসেজ, সালামি, ললিপপ প্রভৃতি খাবারগুলো এখন শুধু ঢাকার বাজারেই সীমাবদ্ধ নেই, বরং সারা দেশেই পাওয়া যাচ্ছে।

এহতেশাম বি. শাহজাহান বলেন, আগামীতে পোলট্রির আরো নতুন নতুন ভ্যালু-অ্যাডেড প্রোডাক্ট বাজারে আসবে। পুষ্টি চাহিদা পূরণ কিংবা রসনা তৃপ্তিই শুধু নয়, পোলট্রি পণ্যকে অধিকতর নিরাপদ করা এবং রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের লক্ষ্যেও কাজ করছেন উদ্যোক্তা ও খামারিরা। ডিম ও মুরগির মাংসবিষয়ক পুষ্টি সচেতনতামূলক তথ্য প্রচারে তিনি তথ্য মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা চান।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরেরর মহাপরিচালক ডা. হীরেশ রঞ্জন ভৌমিক বলেন, প্রোটিনের বড় জোগানদাতা এখন পোলট্রি। শুধু দেশেই নয়, পৃথিবীজুড়েই ডিম ও মুরগির মাংসের চাহিদা বাড়ছে। ডিম নিয়ে বিস্তর গবেষণাও হচ্ছে।

মহাপরিচালক বলেন, বর্তমান সরকার পোলট্রি শিল্পের উন্নয়নে সর্বাত্মক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। স্বল্পতম সময়ে যেন রপ্তানি শুরু করা যায়, সে চেষ্টাও করা হচ্ছে।