এবার সিএমপি কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন দিয়াজের মা-বোন

Looks like you've blocked notifications!
সোমবার চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন দিয়াজ ইরফানের মা জাহেদা আমিন চৌধুরী ও বোন জোবাইদা সরওয়ার। ছবি : এনটিভি

ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সহসম্পাদক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী দিয়াজ ইরফানের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়ে চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনার (সিএমপি) মো. মাহাবুবর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন পরিবারের সদস্যরা।

আজ সোমবার সকালে দিয়াজের মা জাহেদা আমিন চৌধুরী ও বোন জোবাইদা সরওয়ার সিএমপি কমিশনারের সঙ্গে দেখা করে এ দাবি জানান। ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা দিয়াজকে হত্যায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আসামিদেরকে সহযোগিতা করছে বলে অভিযোগ করে পরিবার।

দীর্ঘ দুই বছর তিন মাস ধরে পুলিশ এ হত্যাকাণ্ডের কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করেনি। নানাভাবে তাদেরকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন দিয়াজের মা ও বোন। পুলিশ কমিশনার আসামিদের গ্রেপ্তারে সর্বোচ্চ সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানান তাঁরা।

দিয়াজের মা জাহেদা আমিন চৌধুরী জানান, ছেলে হত্যার ঘটনা দুই বছর ৩ মাস হলেও এ মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। মামলাটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত (সিআইডি) বিভাগের হাতে রয়েছে। তারা পুলিশের সংকটসহ নানা সমস্যার কথা বলছে।

জাহেদা আমিন বলেন, সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তার কাছে কয়েক মাস আগে গেলে তিনি জানালেন, লোকবল সংকটের কারণে আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারছেন না। এখন আমি আবার উনার কাছে যাচ্ছি। দেখি, কী বলেন।

দিয়াজের মা সম্প্রতি স্বরাষ্টমন্ত্রীর সঙ্গেও দেখা করেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর এবার পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে দেখা করলেন তিনি।

জাহেদা আমিন চৌধুরীর অভিযোগ, ‘মামলার আসামিরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঘোরাফেরা করছে। আমাকে আমার পরিবারকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বিচারের আশায় সব জায়গায় ঘুরছি। হাটহাজারী থানার ওসি এখন আমাকে দেখলে অফিস থেকে পালিয়ে যান।’

তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বেলাল উদ্দিন জাহাঙ্গীর। তিনি বলেন, এ মামলাটি দুই বছর ধরে তদন্ত করছে সিআইডি।

দিয়াজের মা বলেন, আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, এ ঘটনায় যেন ন্যায়বিচার করা হয়। আমি কোনো অন্যায় আবদার করছি না। আর যেন কোনো মা সন্তানহারা না হয়। আমি জানি, আমার জীবন দিয়ে দিলেও আমি আল্লাহর কাছ থেকে আমার সন্তানকে ফিরে পাব না। কিন্তু আমি যদি ন্যায়বিচার না পাই এভাবে আরো অনেক মায়ের বুক খালি হবে। আমি দেশে আইনের ন্যায়বিচার চাই, সুশাসন চাই।

দিয়াজের বড় বোন জোবাইদা সরওয়ার জানান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. ইফতেখার আহমেদসহ প্রশাসন আসামিদের নোংরাভাবে সাপোর্ট দিচ্ছে। সম্প্রতি হত্যাকাণ্ডের অন্যতম আসামি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি আলমগীর টিপুর ছবিসহ বিজ্ঞাপন দিয়ে বার্ষিক স্যুভেনির প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী সমিতি। এ ঘটনা দেখে খেলার মাঠে কান্নাকাটি করে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে অসুস্থ হয়ে যান তাঁর মা জাহেদা আমিন।

২০১৬ সালের ২০ নভেম্বর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই নম্বর সড়কের একটি আবাসিক এলাকার ভাড়া বাসা থেকে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাবেক সহসম্পাদক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী দিয়াজ ইরফানের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ২৪ নভেম্বর এ ঘটনায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেন ও বিশ্ববিদ্যায় ছাত্রলীগের সভাপতি আলমগীর টিপুসহ দশজনকে আসামি করে মামলা করেন নিহতের মা জাহেদা আমিন চৌধুরী।