আদালত বললেন

শুধু টাকার পেছনে ঘুরছে, দেশ-মানুষ নিয়ে কেউ ভাবছে না

Looks like you've blocked notifications!

দুধে ভেজাল মেশানো নিয়ে মামলার শুনানিতে হাইকোর্ট উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘মানুষ এখন শুধু টাকার পেছনে ঘুরছে। দেশ ও দেশের মানুষ নিয়ে কেউ ভাবছেন না। খাদ্যে ভেজাল মেশানো একটি বড় দুর্নীতি। এ ধরনের ভেজালে মানুষের কিডনি, লিভার নষ্ট হচ্ছে; ক্যানসার হচ্ছে।’

আজ সোমবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে এ মামলার শুনানিকালে এসব কথা বলেন। আদালত বলেন, ‘খাদ্যে ভেজাল মেশানো একটি বড় দুর্নীতি।’

এ সময় আদালত অন্তর্বর্তীকালীন আদেশে ঢাকাসহ সারা দেশে গরুর দুধ, দই এবং গো-খাদ্যে কী পরিমাণ ব্যাকটেরিয়া, কীটনাশক, সিসা রয়েছে; তা নিরূপণের জন্য একটি জরিপ পরিচালনার নির্দেশ দেন।

আগামী ১৫ দিনের মধ্যে খাদ্য সচিব, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, নিরাপত্তার খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানসহ সব সদস্য, কেন্দ্রীয় নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থাপনা সমন্বয় কমিটি এবং বিএসটিআইর চেয়ারম্যানকে জরিপের প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।

এ ছাড়া দুগ্ধজাত খাবার ভেজাল প্রতিরোধে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষসহ বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তাকে কেন বেআইনি ও অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, এ মর্মে রুল জারি করেছেন আদালত।

পাশাপাশি খাদ্যে ভেজালের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদানের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। পরবর্তী শুনানির জন্য ৩ মার্চ দিন ঠিক করেছেন হাইকোর্ট।

জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের একটি গবেষণা প্রতিবেদন নিয়ে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে খবর প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনের আলোকে আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে আজ এ আদেশ দেন।

গতকাল রোববার ইনস্টিটিউটের মিলনায়তনে ওই প্রতিবেদন সম্পর্কে তথ্য দেওয়া হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, খোলাবাজারে বিক্রি হয় এমন গাভীর দুধের ৯৬টি নমুনার মধ্যে ৯ শতাংশ দুধে ক্ষতিকর মাত্রায় পাওয়া গেছে কীটনাশক, ১৩ শতাংশ দুধে ক্ষতিকর মাত্রায় পাওয়া গেছে অ্যান্টিবায়োটিক টেট্রাসাইক্লিন, ১৫ শতাংশ দুধে ক্ষতিকর মাত্রায় পাওয়া গেছে সিসা, ৯৬ শতাংশ দুধে পাওয়া গেছে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াসহ বিভিন্ন অণুজীব।

অন্যদিকে প্যাকেট তরল দুধের ৩১টি নমুনার মধ্যে ৩০ শতাংশ দুধে ক্ষতিকর মাত্রায় পাওয়া গেছে অ্যান্টিবায়টিক টেট্রাসাইক্লিন, ৬৬ থেকে ৮০ শতাংশ দুধে পাওয়া গেছে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াসহ বিভিন্ন অণুজীব। একটি প্যাকেট দুধে ক্ষতিকর মাত্রায় পাওয়া গেছে সিসা।

৫১ শতাংশ দইয়ের নমুনার মধ্যে পাওয়া গেছে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াসহ বিভিন্ন অণুজীব।