যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও দরিদ্রদের পাশে প্রতিবন্ধী উন্নয়ন পরিষদ
কুমিল্লায় তিন শতাধিক যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, পঙ্গু ও দরিদ্র মানুষকে হুইল চেয়ার, সেলাই মেশিন, শীত বস্ত্র ও বিভিন্ন ত্রাণ সামগ্রী দিয়ে সাহায্য করেছে প্রতিবন্ধী উন্নয়ন পরিষদ। গত ২৯ জানুয়ারি কুমিল্লার টাউনহলে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ওই সহায়তা প্রদান করা হয়।
২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই প্রতিবন্ধীসহ সমাজের অবহেলিত ও দরিদ্র মানুষদের প্রতিষ্ঠিত করতে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে এ প্রতিষ্ঠানটি।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি জাপান প্রবাসী হিমু উদ্দীন ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন প্রধান অতিথিকে। ছবি : সংগৃহীত
প্রতিবন্ধী উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি ডা. তৃপ্তিশ চন্দ্র ঘোষের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র মনিরুল হক সাক্কু, জাপান আইশেডো কো. লি. ও মেসার্স রিও ইন্টারন্যাশনালের চেয়ারম্যান হিমু উদ্দীন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জাপান শাখার আহ্বায়ক শামসুল আলম ভুট্টু, জাতীয় সমাজ কল্যাণ পরিষদের সদস্য পাপড়ী বসু, জেবি ইমপেক্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও জাপান বাংলা টাইমস সম্পাদক মো. লুৎফর রহমান সরকার শিপার। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন প্রতিবন্ধী উন্নয়ন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর রায়হান রহমান হেলেন।
ত্রাণ সামগ্রী নিতে আসা পঙ্গু, দরিদ্র ও অসহায় মানুষদের একাংশ। ছবি : সংগৃহীত
শহরের দুর্গাপুর এলাকা থেকে এসেছেন বিধবা নারী বিলকিস বেগম। একটি সেলাই মেশিন পেয়ে বেশ খুশি তিনি। কথা বলছিলেন আর বারবার চোখের পানি মুছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘স্বামীর মৃত্যুর পর চার সন্তান নিয়ে অথৈ সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছি। এ সেলাই মেশিনটা আমার জীবনের সম্বল হবে। এটাকে আঁকড়ে ধরেই জীবন সংগ্রাম চালিয়ে যাব। এত দিন অন্যের ঘরে অন্যের মেশিন দিয়ে কাজ করে যা পেতাম তা দিয়ে নিজে চলতে অসুবিধাই হতো। এখন নিজের ঘরেই কাজ করব।’
গলিয়ারা এলাকার বাসিন্দা আবদুল মতিন। সড়ক দুর্ঘটনায় দুই পা হারান তিনি। অসহয়ের মতোই এত দিন ঘরে বসে কাটিয়েছন তিনি। হুইল চেয়ারটি পেয়ে আনন্দের কান্না আর থামাতে পারলেন না তিনি।
একজন পঙ্গু ব্যক্তিকে হুইল চেয়ার প্রদানের পর উদ্যোক্তরা। ছবি : সংগৃহীত
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাহাউদ্দিন বাহার বলেন, ‘প্রতিবন্ধী উন্নয়ন পরিষদ হলো কুমিল্লার বাতিঘর। এ বাতিঘর থেকে শুধু কুমিল্লা নয় ধীরে ধীরে সারা দেশে আলো ছড়িয়ে পড়বে- এ প্রত্যাশা উদ্যোক্তাদের কাছে।’
বিশেষ অতিথি হিমু উদ্দিন বলেন, ‘সমাজে দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের ভালোভাবে বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে। প্রতিবন্ধী উন্নয়ন পরিষদ যে কাজটি করছে তা সমগ্র দেশবাসীর কাছে একটি বিরল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে বলে আমি আশা করছি।’