প্রতিকূলতার মধ্যে নির্বাচন করেছেন, কর্মকর্তাদের সিইসি
নির্বাচনী কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, ‘অনেক পরিশ্রম করে, প্রতিকূলতার মধ্যে, সমালোচনার মধ্যে এবং নানা রকমের প্রতিবন্ধকতার মধ্যে আপনারা নির্বাচনের উত্তরণ ঘটিয়েছেন।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে আগারগাঁওয়ের ইটিআই ভবনে ঢাকা উত্তর সিটি মেয়রের শূন্য পদে স্থগিত নির্বাচন, উত্তর ও দক্ষিণ সিটির নবগঠিত ৩৬টি ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে স্থগিত নির্বাচন এবং উত্তর সিটির ৯ ও ২১ নম্বর সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলরের শূন্য পদে নির্বাচন উপলক্ষে রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠান উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সিইসি এসব কথা বলেন।
কে এম নূরুল হুদা বলেন, ‘দেশ পরিচালনার জন্য একটা স্বাভাবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে, গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রয়েছে। সে কারণে আপনাদের ধন্যবাদ। এবার নতুন করে রাজধানী শহর ঢাকার নির্বাচনের দায়িত্ব আপনারা পালন করছেন। তার গতির ধারা অব্যাহত থাকবে, সেটাই আমি প্রত্যাশা করতে পারি।’
সিইসি বলেন, ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরে সিটি করপোরেশন নির্বাচন সঙ্গে সঙ্গে আমাদের একটা প্রস্তুতি পর্বের ধারাবাহিকতাকে বজায় রেখে চলেছে বলে আমি মনে করি। কয়েক দিন আগেই আপনারা একটা সুন্দর নির্বাচন করেছেন, একটা সার্থক নির্বাচন করেছেন, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করেছেন, একটি সরকার প্রতিষ্ঠার কাজ করেছেন, দায়িত্ব পালন করেছেন এবং সে জন্য আপনাদের প্রথমেই অভিবাদন জানাই, ধন্যবাদ জানাই।’
‘যাঁরা এখন মেয়র বা কাউন্সিলর হবেন, তাঁরা এক বছর হাতে পাবেন। তারপর আবার ২০২০ সালের এপ্রিল, মে মাসের দিকে পুরো নির্বাচন হবে। সেদিনটা যাই থাক না কেন, সেটা ভিন্ন জিনিস। কিন্তু নির্বাচনের গুরুত্ব অপরিসীম। সেই গুরুত্ব অনুসারে যেভাবে নির্বাচন করা দরকার, যেভাবে নির্বাচন করতে আমরা অভ্যস্ত এবং জাতিকে সেভাবে নির্বাচন উপহার দিয়েছেন আপনারা। শুধু এই জাতীয় সংসদ নির্বাচন নয়। বিভিন্ন পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ, জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদে নিষ্ঠার সঙ্গে নির্বাচনগুলো করেছেন। সেভাবেই গুরুত্ব দিয়ে নির্বাচন করতে হবে। তার কারণ হলো, এর মেয়াদ যাই থাক না কেন, ঢাকা সিটিতে নির্বাচনের গুরুত্ব অপরিসীম।’
সিইসি আরো বলেন, ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যে রকম দায়িত্ব আপনারা পালন করেছেন। প্রশংসিত হয়েছেন, নন্দিত হয়েছেন বিভিন্নভাবে। দেশি-বিদেশি অবজারভার যাঁরা ছিলেন, এখানে যাঁরা সাংবাদিক ছিলেন, তাঁরা আপনাদের ব্যাপারে কখনো কোনো রকমের বিরূপ মন্তব্য করতে পারেননি, করেননি। সুতরাং আপনাদের মধ্যে স্বচ্ছতা ছিল, নিরপেক্ষতা ছিল, ধৈর্য ছিল এবং সাহসিকতা ছিল সে কারণে। যে যাই বলুক না কেন।’
কে এম নূরুল হুদা আরো বলেন, ‘আরেকটা কথা হলো অনেকে অনেক তির্যক কথা বলবেন, অনেকে অনেক উপদেশমূলক কথা বলবেন, গম্ভীর গম্ভীর কথা বলবেন। সেখান থেকে যতটুকু আহরণ করা দরকার করবেন, প্রয়োগ করা দরকার করবেন এবং সবচেয়ে বড় কথা আপনারা নিজের মেধা, নিজের যোগ্যতা, নিজের বুদ্ধিমত্তা, নিজের সাহস, নিজের নিরপেক্ষতা এবং নিজের আস্থা সেটা সব থেকে বড় কথা, সেটা দিয়ে কাজ করবেন। সুতরাং কবিতা এবং গল্প দিয়ে আপনাদের পেট ভরানো যাবে না। আপনাদের নিজস্ব সত্তা আছে, নিজস্ব যে দায়িত্ব আছে, নিজস্ব যে জ্ঞান আছে সেটাই প্রয়োগ করার দায়িত্ব পালন করবেন।’
‘মাঠে যাঁরা আছেন, তাঁরা এই নির্বাচন কমিশনের আত্মার সঙ্গে জড়িত। আমরা আত্মিকভাবে এর সঙ্গে সম্পর্কিত। সুতরাং এখানে একজনে টোকা দিল, খোঁচা দিল নতুবা ধাক্কা দিল তাতে আপনারা বিচলিত হবেন না। আপনাদের দায়িত্ব যেভাবে দায়িত্ব পালন করা দরকার, সেভাবে দায়িত্ব পালন করে যাবেন,’ যোগ করেন সিইসি।
ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, মো. রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।