দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, ‘আমাদের সন্তানদের শিক্ষা নিয়ে কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেওয়া হবে না। যেকোনো মূল্যে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষা নিশ্চিত করা হবে।’

আজ রোববার সকালে চট্টগ্রাম মহানগরী ও সীতাকুণ্ডের কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আকস্মিক পরিদর্শনকালে দুদক চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।

দুদক সূত্র জানায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ভর্তি-বাণিজ্য ও বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পূর্বঘোষণা ছাড়াই চট্টগ্রামে এসে তিনটি বিদ্যালয় সরাসরি পরিদর্শন করেন দুদক চেয়ারম্যান।

ইকবাল মাহমুদ সকাল সোয়া ৯টায় নগরীর কাট্টলী নুরুল হক চৌধুরী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে উপস্থিত হন। সেখানে তিনি দেখেন, বিদ্যালয়ের আটজন শিক্ষকের মধ্যে শুধু ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক উপস্থিত। ছাত্রছাত্রীদের তিনি বিদ্যালয় প্রাঙ্গণের আশপাশে অলস সময় পার করতে দেখেন।

এদিকে অভিভাবকরা দুদক চেয়ারম্যানকে কাছে পেয়ে তাঁদের সন্তানদের শিক্ষা নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করেন এবং বিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনিয়মের কথা জানান।

এ সময় দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমাদের সন্তানদের শিক্ষা নিয়ে কাউকে ছিনিমিনি খেলত দেওয়া হবে না। যেকোনো মূল্যে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষা নিশ্চিত করা হবে। প্রয়োজনে দুদক দণ্ডবিধির ১৬৬ ধারা প্রয়োগ করবে। যাঁরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ক্ষতিসাধন করবেন বা করার চেষ্টা করবেন, এমন কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’

এরপর দুদক চেয়ারম্যান যান জেলার সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সেখানে গিয়ে দেখেন, ১১ শিক্ষকের মধ্যে দুজন অনুপস্থিত। এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষকের কাছে জানতে চাইলে তিনি অনুপস্থিতির কারণ জানাতে পারেননি।

দুদক চেয়ারম্যান ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতি খাতা পরীক্ষা করে দেখেন, গতকাল যেসব শিক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল, তাদের অনেককেই উপস্থিত দেখানো হয়েছে। আবার সকাল ১০টা পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীদের রোল ডাকা করা হয়নি। এ বিষয়েও স্কুল কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেনি।

পরে ইকবাল মাহমুদ একই উপজেলার শীতলপুর উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শনে যান। সেখানে তিনি জানতে পারেন, টেস্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়া কোনো শিক্ষার্থীকে এবার এসএসসি পরীক্ষার সুযোগ দেয়নি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি জেনে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন।

তবে নবম শ্রেণিতে এক বা একাধিক বিষয়ে অকৃতকার্য ছাত্রছাত্রীদের দুই হাজার টাকার বিনিময়ে দশম শ্রেণিতে উন্নীত করার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘এটা অনৈতিক। শিক্ষাক্ষেত্রে অনৈতিকতার কোনো স্থান থাকতে পারে না।’