বরিশাল মেডিকেলে শিশু রোগীর মাকে মারধরের অভিযোগ
বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে এক শিশু রোগীর মাকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে চিকিৎসক ও সেবিকাদের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে রোগীর স্বজন, চিকিৎসক ও সেবিকাদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। রোগীর মায়ের সঙ্গে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে ওয়ার্ডের দায়িত্বরতরা তাঁকে মারধর করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার দুপুরে হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় শিশু বিভাগে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় মারধরের শিকার হন এক শিশু রোগীর মা ও নগরীর ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রসূলপুর এলাকার বাসিন্দা কামাল হাওলাদারের স্ত্রী চাঁদনী বেগম। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
এতে দায়িত্ব অবহেলা ও রোগীর স্বজনদের হয়রানির অভিযোগে শারমিন নামের এক সেবিকাকে শিশু বিভাগের দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
চিকিৎসক ও সেবিকাদের হাতে মারধরের শিকার হয়েছেন বলে জানিয়ে চাঁদনী বেগম বলেন, শুক্রবার তিন বছর বয়সী ছেলে আলিফ আনসারিকে মলদ্বারের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগে ভর্তি করাই। সেখান থেকে তাকে শিশু মেডিসিন ওয়ার্ডে পাঠান সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক। এরপর আবার সেখান থেকে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে পাঠানো হয়। শনিবার সকালে ডায়রিয়া ওয়ার্ড থেকে পুনরায় শিশু ওয়ার্ড এবং এর কিছুক্ষণ পরে আবার শিশু ওয়ার্ড থেকে শিশু সার্জারি বিভাগে পাঠানো হয়।
চাঁদনী বেগম বলেন, চিকিৎসা না দিয়ে ছেলেকে এক ওয়ার্ড থেকে অন্য ওয়ার্ডে পাঠানোয় এর প্রতিবাদ করেন তিনি। এই নিয়ে শিশু বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক ও সেবিকাদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। সন্তানকে অন্যত্র নিয়ে চিকিৎসা করানোর কথা বলা হলে চাঁদনী হাসপাতালের ব্যবস্থাপত্র নিয়ে যেতে চান। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে চাঁদনী বেগমকে মারধর করেন ওয়ার্ডের দায়িত্বরতরা। বিষয়টি নিয়ে রোগীর অন্যান্য স্বজনদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. অসীম কুমার সাহা বলেন, রোগীর চিকিৎসা নিয়ে কোনো ঝামেলা হয়নি, যা হয়েছে রোগীর অতিথির কারণে। শিশুর মা হাসপাতালের সেবিকাদের কক্ষ থেকে সরকারি ব্যবস্থাপত্র নিয়ে যেতে চান। এ নিয়ে সেবিকা ও রোগীর স্বজনদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়েছে।
হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. বাকির হোসেন বলেন, চিকিৎসকের সঙ্গে কোনো সমস্যা হয়নি। সেবিকার ভুলের কারণেই রোগীর স্বজনদের হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। এজন্য অভিযুক্ত সেবিকা শারমিন আক্তারকে শিশু ওয়ার্ডের দায়িত্ব থেকে অব্যহতিও দেয়া হয়েছে।
হাসপাতালের পরিচালক বলেন, অসুস্থ শিশুর মলদারে যে সমস্যা হয়েছে তার চিকিৎসা আগেই শুরু হয়। কিন্তু সেবিকা না বুঝে তাঁকে এক ওয়ার্ড থেকে অন্য ওয়ার্ডে পাঠিয়েছেন। শিশুটির সুষ্ঠু চিকিৎসার বিষয়ে তাঁর স্বজনদের আমরা আশ্বস্ত করেছি এবং বর্তমানে ওই রোগী শিশু সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছে।